আজগুবি এক কাণ্ড ঘটেছে গাইবান্ধায়। এই খবর এখন টপ অব দ্যা টাউন। ৯ বছর পর মৃত ব্যক্তি কবর থেকে উঠে এসেছে-এই খবরে গাইবান্ধায় শহর তোলপাড় অবস্থা। রহস্যজনক ওই নারীকে দেখতে শত শত মানুষ একটি বাড়িতে ভিড় জমায়। লোকজন ঠেকাতে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
বুধবার দুপুরে তাকে পুলিশের গাড়িতে করে গাইবান্ধায় সদর থানায় নিয়ে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
গাইবান্ধা শহরের ডেভিট কোং পাড়ার বাসিন্দা আনিসুর রহমানের স্ত্রী ৯২ বছর বয়সী বাছিরন বেওয়া ৯ বছর আগে বয়স্ক জনিত কারণে মারা যান। দু’দিন ধরে তার মতো দেখতে এক নারীকে গাইবান্ধা রেল স্টেশন চত্বরে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়।
তাকে দেখতে পেয়ে নিজের মৃত মা কবর থেকে উঠে এসেছে বলে মেয়ে মাজেদা বেগম স্টেশনের পাশেই তার বাড়িতে নিয়ে যায়। বাড়িতে গিয়ে তিনি নিজেকে মাজেদা বেগমের মা বলে দাবি করে খিচুরী রান্না করতে বলেন। মায়ের এই কথা শুনে হতবাক মেয়ে মাজেদা আশপাশের সবাইকে ঘটনাটি খুলে বলেন।
তিনি বলেন, আমার মা বাছিরন বেওয়া ৯ বছর পর কবর থেকে উঠে এসেছে। একই কথা বলেন, তার মা সাদৃশ্য মহিলা। কবর থেকে উঠে আসা মাকে পেয়ে মেয়ে মাজেদা খুশিতে গদগদ। তিনি মায়ের আবদার পালন করতে খিচুরী রান্না করে খাওয়ান। মা ফিরে এসেছে এই বিশ্বাসে তার স্বজনরা আসেন মাকে এক নজর দেখতে। কেউ কেউ মা বা বাছিরন দাদী মনে করলেও অনেকেই আবার বলেন ইনি তার মা নয়। কারণ মৃত্যুর পর তাকে স্টেশন জামে মসজিদে জানাজার পর পৌর কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। তারপর কবর থেকে উঠে আসার বিষয়টি অনেকেই মেনে নিতে পারেনি ।
এলাকার বাসিন্দা রাজনীতিক শফিকুল ইসলাম রুবেল বলেন, মৃত ব্যক্তি কখনোই কবর থেকে উঠে আসতে পারে না। এর পেছনে অন্য কোনো রহস্য থাকতে পারে।
অন্যদিকে কবর থেকে উঠে এসেছে এই খবর প্রচার হয়ে যায় গাইবান্ধা শহরের সর্বত্র। মৃত ব্যক্তি কবর থেকে উঠে এসেছে শুনে শত শত নারী পুরুষ ভিড় জমায় ওই বাড়িতে। লোকজনকে ঠেকানো যাচ্ছিল না। পরে বেগতিক দেখে গাইবান্ধা সদর থানা পুলিশকে খবর দেয়া হয়। পুলিশ গিয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করে গাইবান্ধা থানায় নিয়ে যান।
এলাকার লোকজন বলেন, মৃত নারীর মতো দেখতে বলে তার মেয়ে তাকে নিয়ে বাড়িতে যায়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ওই নারী তার মা নয় বলে জানায়।
গাইবান্ধা পৌর কবরস্থানের গোড়খোদক টুলু মিয়া বলেন, ঘটনা সত্য নয়। ধর্মীয় বিধানে এমন কিছু নেই যে, কবর থেকে মানুষ উঠে আসতে পারে। এটা ভৌতিক বিষয়। এর মধ্যে বাস্তবতা নেই।
গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপারেশন জাহাঙ্গীর আলম জানান, দর্শনার্থী লোকজনের ভিড় ঠেকানো যাচ্ছিলো না । শত শত লোকের ভিড়ে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সেজন্য ওই নারীকে আমরা পুলিশের হেফাজতে নিয়েছি। তার কোনো অভিভাবক খুঁজে পাওয়া গেলে তাদের হাতে তুলে দেয়া হবে।