এজাহারের কপি থেকে জানা গেছে, ৪ নম্বর আসামির বয়স দেখানো হয়েছে ১৮, কিন্তু জন্ম নিবন্ধন অনুসারে তার জন্ম তারিখ ২ অক্টোবর ২০১১। ৮ নম্বর আসামির বয়স এজাহারে বলা হয়েছে ২২, জন্ম নিবন্ধনে যার জন্ম তারিখ ২ জুন ২০১০। আর ৯ নম্বর আসামির জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী বয়স ৯ বছর।

আদালতে স্বেচ্ছায় হাজিরা দিতে এসেছে তিন শিশু। তাদের নামে হত্যাচেষ্টা ও চুরির অভিযোগে মামলা হয়েছে মাদারীপুরের রাজৈর থানায়। আদালতে ওই শিশুদের ছবি মঙ্গলবার ভাইরাল হয়েছে ফেসবুকে, চলছে সমালোচনা।

তিনজনের বাড়ি রাজৈরের বদরপাশা ইউনিয়নের দূর্গাবর্দি গ্রামে। তাদের বয়স ৮ বছর থেকে ১১ বছরের মধ্যে। অথচ মামলায় তাদের বয়স ১৮ এর উপরে দেখানো হয়েছে।
মামলা ও আসামিদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া হাওলাদার ।
তিনি জানান, সোমবার দুপুরে ওই তিন শিশু নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়। তাদের পক্ষে জামিনের আবেদন করা হলে বিচারক মোহাম্মদ হাবীবুল্লাহ তাদের জামিন দেন।

মামলার বরাতে আইনজীবী গোলাম কিবরিয়া জানান, দূর্গাবর্দি গ্রামের শহিদুল বেপারী ও রুহুল বেপারীর সঙ্গে একই বাড়ির টুটুল বেপারীর জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। এর জেরে টুটুলের স্ত্রী মমতাজ বেগম গত ২ মে সন্ধ্যায় ৯ জনের নামে ও অজ্ঞাতপরিচয় ২ থেকে ৩ জনকে আসামি করে রাজৈর থানায় অভিযোগ করেন। নাম উল্লেখ করা আসামিদের মধ্যে আছে শহিদুল বেপারীর দুই ছেলে ও রুহুল বেপারীর এক ছেলে।

এজাহারে বলা হয়, আসামিরা হত্যার উদ্দেশ্যে বাদীপক্ষদের কুপিয়ে, পিটিয়ে আহত করেছে ও চুরি করেছে।

গোলাম কিবরিয়া জানান, রাজৈর থানার ওসি গত ৬ মে অভিযোগ আমলে নিয়ে মামলা হিসেবে রেকর্ড করেন। থানার এসআই শরীফ আশিকুর রহমানকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

এজাহারের কপি থেকে জানা গেছে, আসামিদের মধ্যে ওই তিন শিশুর একজন ৪ নম্বর, একজন ৮ নম্বর ও একজন ৯ নম্বর আসামি। ৪ নম্বর আসামির বয়স দেখানো হয়েছে ১৮, কিন্তু জন্ম নিবন্ধন অনুসারে তার জন্ম তারিখ ২ অক্টোবর ২০১১। ৮ নম্বর আসামির বয়স এজাহারে বলা হয়েছে ২২, জন্ম নিবন্ধনে যার জন্ম তারিখ ২ জুন ২০১০। আর ৯ নম্বর আসামির জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী বয়স ৯ বছর।

গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘মামলার বাদী ও আসামিরা পরস্পর আত্মীয় ও একই বাড়িতে পাশাপাশি বসবাস করেন। অসৎ উদ্দেশ্যে ও ইচ্ছাকৃতভাবে অপ্রাপ্তবয়স্ক তিন শিশুকে মামলার আসামি করা হয়েছে। যা আইনগত অন্যায়। এমন শিশুদের আসামি করায় আদালতপাড়ায় তীব্র সমালোচনা উঠেছে।

এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে রাজি হননি মামলার বাদী মমতাজ বেগম।

রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন বলেন, ‘যে কেউ থানায় মামলা দিতে পারে। পরে মামলাটি তদন্ত করে যদি দেখা যায়, আসামিরা শিশু বা বয়স কম, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে শিশু-কিশোর আদালতে মামলাটি দেয়া হবে। আর পূর্ণ তদন্তে কেউ দোষী না হলে চার্জশীট থেকে তাদের নাম বাদ যাবে। এক্ষেত্রে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।

সাবরীন জেরীন,মাদারীপুর।