রাত পোহালেই ঈদ। শেষ মুহূর্তে পরিবার-পরিজনের রাতে ঈদ করতে রাজধানী ঢাকা ছাড়ছেন অসংখ্য মানুষ। বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুট দিয়ে সারারাত গন্তব্যে ফিরেছেন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীরা। রোববার (১ মে) দিবাগত ভোর রাতের দিকে বৃষ্টি শুরু হলে দুর্ভোগে পড়েন ঘরমুখো যাত্রীরা। ফেরিঘাট থেকে দূরপাল্লার বাসের কাউন্টারে আসতে ভিজতে হয়েছে যাত্রীদের। বৃষ্টি-কাদায় মাখামাখি করে বাড়ি ফিরতে হয়েছে যাত্রীদের।
বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা গেছে, শেষ মুহুর্তে রোববার সন্ধ্যা থেকে শুরু করে ভোররাত পর্যন্ত ঘাট এলাকায় যাত্রীদের চাপ ছিল। রাত দশটা পর্যন্ত লঞ্চে পারাপার শেষে ফেরিতে করে সারারাত পদ্মা পাড় হয়েছেন যাত্রীরা। ভোররাত থেকে বৃষ্টি শুরু হলে বিপাকে পরতে হয়েছে যাত্রী ও ঘাটের পরিবহন শ্রমিকদের। বৃষ্টিতে ভিজে অসংখ্য যাত্রীরা গন্তব্যের বাসে উঠেছেন। এছাড়াও ঘাট এলাকার খাবার হোটেলগুলোতেও আশ্রয় নিতে দেখা গেছে অসংখ্য যাত্রীদের।
ঘাটের খাবার হোটেল মালিকসূত্রে জানা গেছে,‘মধ্য রাতেও ঘরমুখো মানুষের ভিড় ছিল বাংলাবাজার ঘাটে
যাত্রীদের ভিড় থাকায় ঘাটের হোটেলগুলোতে সেহেরীর জন্য রান্না করা হয়েছিল। অসংখ্য যাত্রীরা সেহেরী খেয়ে নিজ নিজ এলাকার গাড়িতে উঠেছেন। ভোর রাতে একটানা দীর্ঘক্ষণ বৃষ্টি হওয়ায় যাত্রীরা টার্মিনাল এবং খাবার হোটেলগুলোতেও আশ্রয় নিয়েছিল।
ঘাটের টার্মিনালে থাকা দূরপাল্লার পরিবহন শ্রমিক মো. আল আমিন জানান,‘মধ্য রাতের দিকে ফেরিতে যাত্রীরা আসতে থাকে ঘাটে। সারারাতই যাত্রীদের ভিড় ছিল বাংলাবাজার ঘাট এলাকায়। এরমধ্যে মধ্যরাত থেকে বৃষ্টি শুরু হলে ফেরিতে আসা বেশির ভাগ যাত্রীদেরই ভিজতে হয়েছে। ঘাট এলাকায় কাদা হয়ে যাওয়া কাদা-পানিতে মাখামাখি করে যাত্রীদের গন্তব্যের গাড়িতে উঠতে হয়েছে। রাতের বৃষ্টিতে ঘাট এলাকার সবারই দূর্ভোগে পরতে হয়েছে।’
বিআইডব্লিউটিসি’র বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা গেছে,‘বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে রাতে ৬ টি ফেরি চলাচল করছিল। এছাড়া মাঝিরকান্দি-শিমুলিয়া রুটে ফরিদপুর নামের একটি ফেরি রাতে চলেছে। সোমবার সকাল থেকে মাঝিরকান্দি-শিমুলিয়া রুটে মোট ৪ টিসহ উভয় রুটে দশটি ফেরি চলছে। গত রাতে ফেরিতে মোটরসাইকেল এবং সাধারণ যাত্রীদের কিছুটা ভিড় ছিল। রাতে লঞ্চ বন্ধ থাকায় দশটার পর থেকে ভোররাত পর্যন্ত ফেরিতে অসংখ্য যাত্রী পদ্মা পার হয়েছে।’
মো. আবু রায়হান নামের বাগেরহাটগামী এক যাত্রী জানান,‘ঢাকা থেকে রাতে রওনা দিয়েছি। ফেরিতে পার হয়ে বাংলাবাজার ঘাটে এসে নামতে ভোররাত হয়। তখন বৃষ্টি হচ্ছিল। বৃষ্টিতে ভিজে ঘাটের খাবার হোটেলে আশ্রয় নিতে হয়েছে। পরে সেহেরী খেয়ে গাড়িতে উঠি।’
আরেকযাত্রী মো. সোহেল বলেন,‘বৃষ্টির কারণে ঘাট এলাকা পিচ্ছিল হয়ে গেছে। একবার পা পিছলে পড়েও গিয়েছি। কাঁদাপানিতে একেবারে মাখামাখি অবস্থা।’
হোটেল শ্রমিক মো. হাসান বলেন,‘আজ সারারাতই যাত্রীদের ভিড় ছিল। ভোররাতে অনেক যাত্রীরা আমাদের এখানে সেহেরী খেয়েছেন। বৃষ্টিতে যাত্রীদের দূর্ভোগ হয়েছে ঘাট এলাকায়।’
বিআইডব্লিউটিএ’র বাংলাবাজার লঞ্চ ঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আক্তার হোসেন বলেন,‘সোমবার (২ মে) ভোর সাড়ে ৬ টা থেকে নৌরুটে লঞ্চ চালু হয়েছে। ভোর থেকেই যাত্রীদের মোটামুটি ভিড় রয়েছে। আজ সারাদিনই থেমে থেমে যাত্রীদের ভিড় থাকবে। গত রাতেও ঘরমুখো যাত্রীদের ভিড় ছিল ঘাট এলাকায়।’