ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানী ও ক্ষয়ক্ষতি কমানোর পাশাপাশি গণপরিবহনের সুষ্ঠু চলাচল নিশ্চিত করতে দেশের সকল জাতীয় মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলাচল নিয়ন্ত্রণ, রিক্সা, ইজিবাইক, অটোরিক্সা চলাচল বন্ধের দাবী জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। আজ ২৪ এপ্রিল রবিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই দাবি জানান।

বিবৃতিতে তিনি দাবি করেন, করোনা সংকটে বিগত দুইবছরে দেশের পরিবহনের বহরে ১০ লাখ মোটরসাইকেল নতুনভাবে যুক্ত হয়েছে। একই সময়ে প্রায় ২০ লাখ ইজিবাইক রাস্তায় নেমেছে। বর্তমানে ৩৫ লাখের বেশি মোটরসাইকেল ও ৪০ লাখের কাছাকাছি ইজিবাইক রাস্তায় চলাচল করে। যা দেশের যানজট ও জনজট প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে দিয়েছে। এবারের ঈদে জাতীয় মহাসড়কে এসব যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে ভয়াবহ যানজটের ভোগান্তিতে পড়তে হতে পারে।

বিবৃতিতে জনাব মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরো বলেন, এবারের ঈদে গণপরিবহন সংকটকে কাজে লাগিয়ে ১২ লাখ ট্রিপ যাত্রী রাজধানী ঢাকা থেকে আশেপাশের জেলাসহ বিভিন্ন দুর-দুরান্তে মোটরসাইকেলে যাত্রা হতে পারে। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন আন্তঃজেলায় রাইড শেয়ারিং পন্থায় আরো প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ লাখ ট্রিপ যাত্রী মোটরসাইকেলে বাড়ি যাবে। ঈদ যাত্রী বহরে দেশের জাতীয় মহাসড়কে ২০ থেকে ২৫ লাখ মোটরসাইকেল রাস্তায় থাকবে। এসব মোটরসাইকেলে স্ত্রী-সন্তান লাগেজ-ব্যাগেজ নিয়ে ভারসাম্যহীন অবস্থায় বেপরোয়াভাবে বাস-কারের সাথে পাল্লা দিয়ে চলতে গিয়ে প্রায়শ দুর্ঘটনা ঘটছে। বিগত ঈদে ৩১৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২৩ জন নিহত ৬২২ জন আহত হয়েছিল। এতে কেবল মোটরসাইকেলে ১৪৪ টি দুর্ঘটনায় ১৩৯ জন নিহত, ১৯৯ জন আহত হয়েছিল। যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৪৫.২৮ শতাংশ, নিহতের ৪৩.০৩ শতাংশ এবং আহতের ৩১.৯৯ শতাংশ। এবারের ঈদে অতীতের যেকোন সময়ের প্রায় ৩ গুণ যাত্রী মোটরসাইকেলে যাত্রা করতে পারে। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকিও ৩গুণ বেড়ে যেতে পারে। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ করা গেলে এবারের ঈদে ৫০ শতাংশ দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব।

বিভিন্ন জাতীয় মহাসড়কে সার্ভিস লেইন না থাকায় ঈদ যাত্রী বহণের জন্য ১৫ লাখের বেশি ইজিবাইক, রিক্সা, অটোরিক্সা বিভিন্ন জাতীয় মহাসড়কে নেমে আসতে পারে। এসব ছোট যানবাহন দুরপাল্লার বাস ও প্রাইভেট কারের গতি কমিয়ে দেওয়া, গুরুত্বপূর্ণ জাংশনে যানজট তৈরি করা, রাস্তার মোড় ও বাস স্টপেজ গুলোতে যানজট তৈরি করার পাশাপাশি দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেবে। তাই এবারের ঈদযাত্রায় জাতীয় মহাসড়কে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি রিকশা, অটোরিকশা, ইজিবাইক ও নসিমন-করিমন চলাচল বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবী জানিয়েছে সংগঠনটি।