‘সত্যি বলতে এখানে (বনানী কবরস্থানে) স্থায়ী করতে হলে অনেক টাকা লাগে। প্রায় এক কোটির মতো। আমাদের কাছে তো এত টাকা নেই। রুবেলের জন্য একটু মাটি যেন, আমার ছেলেটা (রুশদান) দেখতে পারে। দুই বছর পর তুলে ফেললে আমরা তো আর পাব না। রুবেল তো আর কোথাও নেই, হারাই গেছে। আমাদের জন্য শুধু এখানেই আছে।’- সদ্য প্রয়াত স্বামী মোশাররফ রুবেলের কবর স্থায়ী করার জন্য কান্নাজড়িত কণ্ঠে প্রধানমন্ত্রী ও মেয়রের কাছে মৌখিক আবেদন করেন স্ত্রী ফারহানা রুপা চৈতি। বাংলাদেশের সাবেক এই ক্রিকেটারের স্ত্রী চৈতির এমন আবেদন বিফলে যায়নি। মানবিক বিবেচনায় বনানীতে মোশাররফ রুবেলের কবর স্থায়িত্ব করার নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা উত্তরের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। আজ রোববার (২৪ এপ্রিল) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা উত্তরের মেয়র।
গত ১৯ এপ্রিল ব্রেন টিউমার ও ক্যানসারের কাছে পরাজিত হয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার মোশাররফ রুবেল। মৃত্যুকালে প্রয়াত এই ক্রিকেটারের বয়স হয়েছিল ৪০ বছর। সাড়ে তিন বছর ক্যানসারের সঙ্গে যুদ্ধ করা রুবেলের মৃত্যুর পর তাকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়। যেখানে নিয়মানুযায়ী দুই বছর পর কবর তুলে ফেলা হয়। তবে স্বামী রুবেলের কবর যেন স্থায়ী করা হয়, এমন আবেদন করেছিলেন স্ত্রী চৈতি।
শনিবার বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন জানিয়েছিলেন, বোর্ডের পক্ষ থেকে যতটুকু চেষ্টা করা সম্ভব করবেন তারা। তবে এর পরদিনই ঢাকা উত্তর মেয়রের পক্ষ থেকে স্বামীর কবরের স্থায়িত্বের স্বস্তির খবর মিলল রুবেলের স্ত্রী ফারহানা চৈতি ও সন্তান রুশদানের জন্য।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মেয়রের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার সদ্য প্রয়াত মোশররফ হোসেন রুবেলের কবরটি মানবিক বিবেচনায় স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
সদ্য প্রয়াত ক্রিকেটার মোশাররফ হোসেন রুবেলের স্ত্রী চৈতি ফারহানা মিডিয়ার মাধ্যমে রুবেলের কবরটি স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের জন্য মেয়রের প্রতি মৌখিকভাবে আবেদন জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এই মুহূর্তে ওমরা পালনে পবিত্র নগরি মক্কায় অবস্থান করছেন। তিনি মিডিয়ার মাধ্যমে আবেদনটি জেনে কবরটি সংরক্ষণ করতে এই নির্দেশনা প্রদান করেন।’ এ ছাড়াও ক্রিকেটার মোশাররফ হোসেন রুবেলের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘মোশাররফ হোসেন রুবেল নিজের জন্য খেলেনি, দেশের জন্য খেলেছেন। তার অবদান দেশের মানুষকে গর্বিত করেছে। সে কারণে তার কবরটি স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করা আমাদের দায়িত্ব বলে মনে করছি।’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের এই মেয়র আরও যোগ করেন, ‘যে মানুষটি বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশের সুনাম ছড়িয়ে দিয়েছেন সে মানুষটি চিরবিদায়ের বেলায় এক টুকরো মাটি পাবে না, তা হতে পারে না।’
তিনি জানিয়েছেন, পবিত্র ওমরা পালন শেষে দেশে ফিরে বিধি মোতাবেক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে ক্রিকেটার রুবেলের কবরটি স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করে দেওয়া হবে।