আসন্ন রমজান উপলক্ষ্যে ভর্তুকি মূল্যে নিম্ম আয়ের পরিবারের মাঝে টিসিবি পণ্য সরবরাহ কার্যক্রমের সরকারি উদ্যোগের প্রথম দিনেই গাজীপুর মহানগরীতে কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিক্রি হওয়া টিসিবি’র বিপুল পরিমাণ পণ্য রবিবার রাতে মহানগরীর এক ব্যবসায়ীর গুদাম থেকে জব্দ করা হয়েছে। এসময় ওই ব্যাবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে জিএমপি’র গাছা থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতের নাম- মো. শাহীন (৩৩)। তিনি মহানগরীর পূবাইল থানাধীন হায়দরাবাদ এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে।
এলাকাবাসী জানান, রবিবার ছিল আসন্ন রমজান উপলক্ষ্যে ভর্তুকি মূল্যে নিম্ম আয়ের এক কোটি পরিবারের মধ্যে টিসিবি পণ্য সরবরাহের সরকারি উদ্যোগের প্রথম দিন। এদিন টিসিবি’র পণ্য বিক্রি করা হলেও নির্ধারিত কার্ডধারী অনেকেই পণ্য না পেয়ে ফিরে যান। তারা পণ্য সরবরাহকারিদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তুলেন।
জিএমপি’র গাছা থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) নন্দ লাল চৌধুরী জানান, রবিবার রাতে জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে জিএমপি’র গাছা থানা পুলিশ রাত সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয় বোর্ড বাজারের কলমেশ্বর এলাকার মহর খান ওয়াকফ এস্টেট মার্কেটে অভিযান চালায়। পুলিশ ওই মার্কেটের ‘মেসার্স মা স্টোর’ এর মালিক শাহীনের ভাড়াকৃত গুদামে টিসিবি’র লেখা ও মনোগ্রামযুক্ত পণ্য অবৈধভাবে গুদামজাত অবস্থায় দেখতে পান। এসময় পুলিশ ওই গুদাম থেকে দুই লিটার বোতলের ৪৬ বোতলে ৯২ লিটার সয়াবিন তেল, ৪৮ প্যাকেটে ৮৬ কেজি ৪শ’ গ্রাম চিনি, ৪৬ প্যাকেটে ৮২ কেজি ৮শ’ গ্রাম মসুরের ডাল জব্ধ করে। ওই পণ্যের ক্রেতা ও ব্যবসায়ী শাহীনকে এসময় গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় গাছা থানার এসআই মো: নাদির-উজ-জামান বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে থানায় মামলা দায়ের করেন।
গ্রেফতারকৃতের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, এসব পণ্য জাহাঙ্গীর আলম ও রফিক নামে দুই ব্যক্তি তার কাছে বিক্রি করেছেন। তার কাছে দুই লিটারের প্রতি বোতল সয়াবিন তেল ৩০০ টাকা করে (প্রতি লিটার ১৫০ টাকা দরে), ৬০ টাকা কেজি দরে চিনি ও ৭০ টাকা কেজি দরে মসুর ডাল বিক্রি করা হয়েছে। আরো কয়েকজন ব্যবসায়ীর কাছেও এসব পণ্য বিক্রি করা হয়।
জিএমপি’র গাছা থানার ওসি মো. ইসমাইল হোসেন এ ব্যাপারে বলেন, টিসিবি’র বেশ কিছু পণ্য উদ্ধার এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত শাহীনকে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে গাজীপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৩৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ আল মামুন মন্ডল জানান, টিসিবি’র পণ্য নির্ধারিত ডিলারের মাধ্যমে নির্ধারিত কার্ডধারীদের মাঝে বিক্রি করা হয়। এসব পন্য বিক্রির ক্ষেত্রে কোন অনিয়ম হলে তার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ডিলারের, ওয়ার্ড কাউন্সিলরের নয়।
গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবুল কালাম বলেন, টিসিবি’র পণ্য ডিলারের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়। তবে এর তদারকির মূল দায়িত্ব ওয়ার্ড কাউন্সিলরের। কোন পণ্য অবিক্রিত থাকলে কাউন্সিলের নেতৃত্বে ট্যাগ কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে অবিক্রিত পণ্য সমূহ উপস্থিত নি¤œ আয়ের লোকদের মাঝে বিক্রি করে দেওয়া হবে, না-কি অবিক্রিত পণ্য সমূহ অন্য দিন বিক্রি করা হবে।