গাজীপুরে রাজেন্দ্রপুরের একটি ডিসকো ক্লাব থেকে ২৮৮জনকে জুয়া খেলা, মাদক সেবন ও সংরক্ষণসহ অসামাজিক কর্মকান্ডের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ২৭৭জনকে অর্থদন্ড এবং বাকী ১১জনের প্রত্যেককে এক মাসের করে বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন। বৃহষ্পতিবার সকাল পর্যন্ত গাজীপুর জেলা প্রশাসন ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন রাজেন্দ্রপুরের অননুমোদিত নতুনধারা ডিসকো ক্লাবে যৌথ অভিযানে তাদের আটক করে। এসময় তাদের কাছ থেকে ইয়াবা, হেরোইন, গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়।
কারাদন্ড প্রাপ্তরা হলে– শহীদ খান জজ (৫২), দেলোয়ার হোসেন (৩৮), রতন চন্দ্র সাহা (৫২), নজরুল ইসলাম আকন্দ (৪৪), জয়নাল আবেদীন ফকির (৪২), নারায়ন চন্দ্র গৌর মানিক (৩৫), মোঃ আল ইমরান (৪৫), আব্দুল মান্নান (৫৫), তোফায়েল আহমদ (৩২), আবুল বাশার (৪৩) ও রাশেদুল ইসলাম (৩২)। তাদের বিরুদ্ধে মাদক আইনে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জিএমপি’র উপ পুলিশ কমিশনার (অপরাধ-উত্তর) জাকির হাসান জানান, গাজীপুর মহানগরীর রাজেন্দ্রপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন এলাকায় অননুমোদিত ভাবে নতুনধারা ডিসকো ক্লাব গড়ে তুলেন নজরুল ইসলাম এবং তার সহযোগীরা। গত ডিসেম্বরে ডিসকো ক্লাব কর্তৃপক্ষ পাঁচদিন ক্লাবটি পরিচালনা করেন। খবর পেয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) তা বন্ধ করে দেয়। এরপর গত চারদিন ধরে আবারো ক্লাবটি চালু করে সেখানে নানা অসামাজিক কর্মকান্ড পরিচালনা শুরু করে তারা।
তিনি জানান, অননুমোদিত নতুনধারা ডিসকো ক্লাবে অসামাজিক কার্যক্রম পরিচালনার গোপন সংবাদ পেয়ে গাজীপুর জেলা প্রশাসন ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের যৌথ টিম বুধবার মধ্য রাতের দিকে সেখানে অভিযান চালায়। বৃহষ্পতিবার সকাল পর্যন্ত এ অভিযানকালে সেখানে জুয়া খেলা ও অন্যান্য অপরাধে মোট ২৮৮ জনকে আটক করা হয়। এসময় তল্লাশি চালিয়ে ২১০পিস ইয়াবা, ১ কেজি গাঁজা, ৪ বোতল ইম্পেরিয়া হুইস্কি ও ১০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতারকৃত ২৭৭ জন জুয়া খেলার অপরাধ স্বীকার করলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তাদের অর্থদন্ড প্রদান করা হয়। বাকী ১১জনের প্রত্যেককে ১ মাসের করে বিনাশ্রম কারাদন্ড ও মাদক আইনে নিয়মিত মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান জানান, গত কিছুদিন ধরে উক্ত ক্লাবে অসামাজিক কাজকর্ম ও মাদক বেচা কেনা হচ্ছিল। এ তথ্যের ভিত্তিতে গাজীপুর জেলা প্রশাসন ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ যৌথভাবে এই অভিযান পরিচালনা করেছে।
জিএমপি’র পুলিশ কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির বিপিএম জানান, অভিযানকালে গাজীপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদুর রহমান ও জাহিদ বিন কাশেম উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার জাকির হাসান (অপরাধ-উত্তর) ও ইলতুৎমিশ (অপরাধ-দক্ষিণ) এর নেতৃত্বে কর্মকর্তাসহ পুলিশের ৮০জন সদস্য এ অভিযানে অংশ নেন।