ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারাগারে থাকা সুনামগঞ্জের ঝুমন দাস জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে সুনামগঞ্জ কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। কারাগার থেকে বের হয়ে কারা ফটকে থাকা মা নিভা রানী দাসকে সালাম করেন ঝুমন। এ সময় মা নিভা রানী ছেলেকে চুম্বন করে গলায় জড়িয়ে ধরেন। ঝুমন দাস তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় গণমাধ্যম কর্মী, মানবাধিকার কর্মী, রাজনৈতিক কর্মীসহ তার মুক্তির জন্য সহযোগিতাকারী সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
এ সময় ঝুমন দাস বলেন, ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কারাবরণ করেছেন। আমি সামান্য মানুষ ২০০ দিন কারাভোগ করেছি। সকলের প্রচেষ্টায় বেরিয়ে আসতে পেরেছি। এর বেশি মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি। মা নিভা রানী দাশ বলেন, আমরা খুশি, ছেলেটি নিঃশর্ত মুক্তি পেলে আরও বেশি খুশি হতাম। গত প্রায় ৬ মাস আতঙ্ক, উৎকণ্ঠায় দিন কেটেছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা নিরাপত্তা চাই, পরিবার ও ছেলের নিরাপত্তা দেবার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।
বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কেএম জাহিদ সারওয়ারের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ গত বৃহস্পতিবার ঝুমন দাসের জামিন মঞ্জুর করেন। শর্তসাপেক্ষে এক বছরের জামিন দেওয়া হয় ওইদিন ঝুমনকে। এ সময়ের মধ্যে আদালতের অনুমতি ছাড়া তিনি সুনামগঞ্জের বাইরে যেতে পারবেন না। সোমবার সকালে একই আদালত তার মুক্তির আদেশে স্বাক্ষর করলে সকল প্রক্রিয়া শেষে মঙ্গলবার মুক্তি পান ঝুমন। সুনামগঞ্জ জেলের জেলার শরিফুল ইসলাম বলেন, আদালতের আদেশে মঙ্গলবার বিকেলে ঝুমন মুক্তি পেয়েছেন।
শাল্লার নোয়াগাঁও গ্রামের ঝুমন দাসের ফেসবুক আইডি থেকে হেফাজত ইসলামের বিতর্কিত নেতা মাওলানা মামুনুল হককে সমালোচনা করে গত ১৬ মার্চ ফেসবুকে দেওয়া কথিত স্ট্যাটাসের প্রতিক্রিয়ায় হেফাজত ইসলামের সমর্থকরা পরদিন ১৭ মার্চ হিন্দু অধ্যুষিত নোয়াগাঁও গ্রামের ৮৮ বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও ভাংচুর করে।
গ্রামের ৫টি মন্দিরও ভাংচুর করা হয়। এ ঘটনায় তিনটি মামলা হয়। মামলাগুলো তদন্ত করছে গোয়েন্দা পুলিশ। তিন মামলায় গ্রেপ্তার ও আদালতে স্বেচ্ছায় হাজির হওয়াসহ ১১৩ জন আইনের আওতায় এসেছেন। হামলা, লুটপাট ও ভাংচুরের মামলার আসামি ইউপি সদস্য শহীদুল ইসলাম স্বাধীন মিয়াসহ অধিকাংশ আসামি আদালত থেকে ইতিমধ্যে জামিন পেয়েছেন।