অধিক লাভের প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকদের প্রায় ১০ কোটি টাকা আত্নসাতের অভিযোগে এক স্কুল শিক্ষিকাকে আটক করেছে পুলিশ। পাবনার বেসরকারি একটি স্কুলের শিক্ষিকার বিরুদ্ধে হালাল উপার্জনের প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষদের কাছে থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে সন্ধ্যা পযর্ন্ত প্রতারণার স্বীকার হওয়া ভুক্তভোগীরা ওই নারীর বাড়ি অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। পরবর্তীতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে রাত সাড়ে ৯ টার দিকে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নারীকে আটক করে।
প্রতারনার স্বীকার ভুক্তভোগীরা জানান, পাবনা পৌর এলাকার পুলিশ লাইনস স্কুল এন্ড কলেজের প্রাথমিক শাখার শিক্ষিকা মোছাঃ সীমা আক্তার (৪০)। তিনি পৌর এলাকার আটুয়া হাউজ পাড়া মহল্লার মৃত হানিফুল ইসলামের স্ত্রী। এই শিক্ষিকা সাধারণ মানুষদের ইসলামী শরিয়া মোতাবেক গরুর খামার ও আরো নানা ধরনের হালাল উপর্জনের কথা বলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন। তিনি শুধু সাধারন মানুষই নয় বোকা বানিয়েছেন নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একাধিক শিক্ষক, পুলিশ সদস্যদেরও। মানুষ তার কথায় বিশ্বাস করে লাভের আশায় তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অর্থ বিনিয়োগ করে। লাভের অংক বেশি হওয়ায় লোভে পরে অনেকেই সেখানে অর্থ বিনিয়োগে করতে আগ্রহী হয়। প্রথম পর্যায়ে বিনিয়োগ কারীদের আকৃষ্ট করতে তাদেরকে লাভের অর্থ প্রদান করেন। কিন্তু পরবর্তীতে টাকার অংক বেড়ে গেলে তিনি সমস্ত টাকা আত্মসাত করে গা ঢাকা দেন।
এদিকে মাসিক লাভের অর্থ নিতে এসে ওই নারী ব্যবসায়ীকে না পেয়ে তখন সকলেই বুঝতে পারে তারা চরম প্রতারনার স্বীকার হয়েছেন। এদিকে ওই প্রতারকের কাছে অর্থদিয়ে অনেকেই এখন সর্বশান্ত হয়ে পড়েছেন বলে জানান। এই ঘটনার পরে স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই নারী প্রতারককে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করেছেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ। ঘটনার পরে ভুক্তভোগীরা পাবনা সদর থানাতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করছেন। এই প্রতারক নারী শিক্ষিকা অনেকের কাছ থেকে চেক ও স্ট্যাম্পের মাধ্যমেও অর্থ নিয়েছেন বলে জানা যায়।
এই ঘটনায় ভুক্তভোগী প্রতারনার স্বীকার হওয়া সাধারণ মানুষ তাদের অর্থ ফিরে পাবার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে প্রতারক মোছা: সীমা আক্তার বলেন, ‘আমার কোন বৈধ ব্যবসা নাই। এক জনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আরেক জনকে দিয়েছি। যারা টাকা দিয়েছে তাদেরকে সুদের অনেক টাকা লাভ দিয়েছি। তিনি বলেন ১০ কোটি নয়। তিন কোটি টাকার মত হবে। সেই সকল টাকা আমি দিয়ে দিবো। আর যারা সুদের বা লাভের টাকা নিয়েছে তাদেরটা দিবোনা। আর আমাকে কেন স্কুল থেকে বহিস্কার করেছে সেটি স্কুল কর্তৃপক্ষ জানে। আমি ব্যক্তিগত কাজে বাইরে ছিলাম। জেলা পুলিশ আমাকে আসতে বলেছে বলে আমি এসেছি।
পাবনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম ঘটনার সত্যততা স্বীকার করে জানান অনেকেই তার বিরুদ্ধে তথ্য প্রমান নিয়ে এসেছেন। রাত সাড়ে ১২ টার দিকে তার বিরুদ্ধে আত্মসাতের মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করলে সত্যতা বেরিয়ে আসবে। বুধবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।