জাপানি মা চিকিৎসক নাকানো এরিকোকে নিয়ে অপপ্রচার চালানো সব কনটেন্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এছাড়া জাপানি মাকে নিয়ে এসব ভিডিও তৈরির সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জাপানি মায়ের আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। বিটিআরসির চেয়ারম্যান ও পুলিশের সাইবার টিমকে এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

আদালতে আজ জাপানি মায়ের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। অন্যদিকে ছিলেন অ্যাডভোকেট ফওজিয়া করিম ফিরোজ। শুনানিতে শিশির মনির আদালতকে বলেন, এরিকো দুই মেয়ের সঙ্গে রাতে থাকতে চান। এছাড়া কেনাকাটা ও বিনোদনমূলক কাজে অংশ নেওয়ার জন্য শিশুদের সঙ্গে নিয়ে ইউনিমার্ট যেতে চান। জাপানি মাকে নিয়ে আপলোড হওয়া ভিডিও কনটেন্টের বিষয়ে আইনজীবী বলেন, ‘আরও একটি বিষয় বলতে চাই, তবে লজ্জা লাগছে।’ এসময় তিনি আবেদনের পৃষ্ঠা উল্লেখ করে ভিডিও লিংক দেওয়া আছে বলে জানান।

শিশির মনির বলেন, ‘সেখানে কমপক্ষে ১৭টি লিংক রয়েছে। যেখানে জাপানি নারীকে নিয়ে বিভিন্ন চটকদার ভিডিও ও নারী উপস্থাপকরা উপস্থাপনা করেছেন। কোনোটিতে দুই মিলিয়ন, চার মিলিয়ন, ছয় মিলিয়ন এমনকি সাত মিলিয়ন ভিউয়ার। যেখানে প্রায় ৭০ লাখ মানুষ দেখেছেন এই ভিডিওগুলো। এগুলো অপসারণের নির্দেশনা চাই।’

এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর জাপানি মা চিকিৎসক নাকানো এরিকোকে নিয়ে অপপ্রচার সংক্রান্ত সব কনটেন্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরোনার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। গেল ৩১ আগস্ট হাইকোর্ট আদেশ দেন বাবা-মাসহ রাজধানীর গুলশানের চার কক্ষবিশিষ্ট একটি বাসায় থাকবে জাপানি দুই শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনা। সেখানে তারা আপাতত ১৫ দিন থাকবে। ফ্লাটের ভাড়া উভয়পক্ষ বহন করবে।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের ঢাকার ডেপুটি ডিরেক্টর তাদের তত্ত্বাবধান করবেন। প্রয়োজনে এ কর্মকর্তা ওই ফ্ল্যাটে রাত্রিযাপন করতে পারবেন। গুলশানের বাসায় থাকাকালীন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা মহানগর পুলিশ ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) বলা হয়েছে। আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী আদেশ দেবেন আদালত। তবে এ সময়ে হাইকোর্ট পুরো বিষয়টি নজরে রাখবেন।