করোনাভাইরাসের মহামারির মধ্যে বন্ধ হয়ে যাওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দ্রুত খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য হাসিবুর রহমানের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন সংসদ নেতা। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে আয়োজিত অধিবেশনের শুরুতেই শোক প্রস্তাবটি উত্থাপন করা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘শিক্ষকদের টিকা দেওয়া হয়েছে। শিক্ষকদের পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যারা কর্মরত তাদের পরিবারের সদস্যদেরও যেন টিকা দেওয়া হয় সে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা মেনে স্কুলের ছেলে-মেয়েদের টিকা দেওয়ার ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। এ জন্য ফাইজারের কিছু টিকা ইতোমধ্যে এসে পৌঁছেছে এবং আরও আসবে। মডার্নার টিকার জন্যও চেষ্টা চলছে।’ ইতোমধ্যে ছয় কোটি টিকার টাকা অগ্রিম দেওয়া হয়েছে বলেও সংসদকে জানান প্রধানমন্ত্রী।
টিকা দেওয়ার পরও অনেকের করোনা হয়। এ কারণে সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনা থেকে ভালো হওয়ার পরও নানা জটিলতা থেকে যায়। যাদের অন্যান্য রোগ আছে, তাদের ক্ষেত্রে করোনা ঝুঁকি বাড়ায়। এ জন্য সবাইকে নিজের ভালো নিজেকে বুঝে চলতে হবে।’
‘সরকারের পক্ষ থেকে যা যা করা দরকার আমরা করে যাচ্ছি’, যোগ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। তিনি আরও বলেন, ‘আমি জানি অনেকে অনেক কিছুই বলেন। কিন্তু বাস্তব চিত্রটা যদি দেখেন, অন্য দেশের সঙ্গে যদি তুলনা করেন, আমাদের এই ঘন বসতিপূর্ণ এলাকা, সেই জায়গায় এটা নিয়ন্ত্রণে আমরা যেভাবে ব্যবস্থা নিয়েছি অনেক উন্নত দেশও কিন্তু নিতে পারেনি, এটা হলো বাস্তবতা।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে আমি বলবো যার যার নিজেরও সজাগ থাকা, নিজেকে সুরক্ষিত রাখা ও নিজে সাবধানে থাকা উচিত। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার দিকেও সবাইকে দৃষ্টি দিতে হবে। করোনার প্রকোপ এখন কমেছে কিন্তু সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। ’
এখন ডেঙ্গুর প্রকোপও বাড়ছে উল্লেখ করে সবাইকে ঘর-বাড়ি ও আশপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার পরামর্শ দেন সংসদ নেতা।
হাসিবুর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি ছিলেন কর্মীবান্ধব। মানুষের জন্য কাজ করার আন্তরিকতা তার একটি বড় গুণ ছিল। তার এই অকাল মৃত্যু দেশের জন্য ক্ষতি। এই সংসদে বেশ কয়েকজন সদস্যকে হারাতে হয়েছে। বারবার শোক প্রস্তাব নিতে হচ্ছে, এটা নিয়ে বলার ভাষা নেই আমার।’
শোক প্রস্তাবের ওপর আওয়ামী লীগ ছাড়াও বিএনপি ও জাতীয় পার্টির একাধিক সংসদ সদস্য অংশগ্রহণ নেন। আলোচনা শেষে শোক প্রস্তাবটি সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। পরে কয়েক ধাপে তা আগামী ১২ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়।