তালেবান যখন আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখল করে নেয় তখন দেশটির কান্দাহার প্রদেশের দুর্গম মরুপ্রান্তরে আটকে পড়েছিলেন ২০ জন ব্রিটিশ সেনা। তালেবানের ফিরে আসায় আতঙ্কিত মানুষ তখন আফগানিস্তান ছাড়তে মরিয়া হয়ে ভিড় করছিল কাবুল বিমান বন্দরে। তাই তখন আটকে পড়া এই সেনাদের উদ্ধার করা সম্ভব না হলেও গত বুধবার মধ্যরাতে ব্রিটিশ বিমান বাহিনীর এক রুদ্ধশ্বাস অভিযানে উদ্ধার করা হয় তাদের।

গত রোববার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৫ আগস্ট কাবুল দখলের অনেক আগেই কান্দাহার দখল করেছিল তালেবান। কান্দাহারের ওই দুর্গম পাদদেশীয় এলাকা এক সময়ে প্রায় ২৬ হাজার বিদেশি সৈন্য মোতায়েন ছিল। বর্তমানে ওই এলাকা তালেবান যোদ্ধাদের দখলে। আর সেই এলাকাতেই তালেবান বাহিনীর ব্যারিকেডে আটকে পড়েছিল এই ২০ ব্রিটিশ সেনা।

ক্রমাগত স্থান পরিবর্তন করে একটি গোপন আস্তানায় পাঁচ দিন কোনো রকমে বেঁচেছিলেন তারা। জরুরি ভিত্তিতে উদ্ধারের জন্য ব্রিটেনে বার বার ফোন করা সত্ত্বেও তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছিল না। কারণ, সেই সময়ে কাবুল থেকে ব্রিটিশ নাগরিকদের দেশে ফেরাতেই কার্যত ব্যস্ত ছিল দেশটির বিমান বাহিনী। কিন্তু পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হতে থাকায় শেষমেশ রাতের আঁধারে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত ব্রিটিশ রয়্যাল এয়ার ফোর্স। উদ্ধার কাজ চালানোর জন্য বেছে নেওয়া হয় ব্রিটিশ ‘হারকিউলিস’ সামরিক বিমানকে।

হারকিউলিসকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল উপসাগরীয় আকাশ পথে। এই অভিযানের তথ্য এড়াতে বিমানের সব সেন্সর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। যেন কোনো রাডারের ওই বিমানের গতিবিধি ধরা না পড়ে। একেবারে হলিউড ছবির মতোই কান্দাহারের মরুভূমিতে অবতরণ করেছিল হারকিউলিস। তারপর উদ্ধার করা হয় আটকে পড়া ওই ব্রিটিশ সেনাদের।

তাদের মধ্যে এক ব্রিটিশ সেনা বলেন, ‘ভয়ঙ্কর অভিযান ছিল। আমরা ওখানে আফগান সেনার সঙ্গে জোট বেঁধে লড়ছিলাম। শুক্রবার তালেবান বাহিনী কান্দাহার আক্রমণ করায় বহু আফগান সেনা আত্মসমর্পণ করেছেন। তার পরই আমরা সম্পূর্ণ একা হয়ে যাই ওই এলাকায়।’