গাজীপুরে ছেলেকে খুন করার বিচার চাইতে গিয়ে পোশাক কর্মী বাবা খুন হওয়ার ঘটনায় এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে ৫জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। বৃহষ্পতিবার গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) সদর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
মামলার আসামিরা হলো- গাজীপুর মহানগরীর বাহাদুরপুর তুলসীভিটা এলাকার সিদ্দিক মিয়ার ছেলে মোজোম্মেল (৩৫), একই এলাকার মৃত সিরাজ উদ্দিনের ছেলে আলমগীর (৩২), হাবিবর বেপারীর ছেলে রুবেল (৩০), আলম বেপারীর ছেলে মান্নান (৩৫) এবং বাবু (২৮)। এদের মধ্যে আলমগীরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
জিএমপি সদর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম মামলার উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, গাজীপুর মহানগরীর সদর থানাধীন বাহাদুরপুর তুলসীভিটা এলাকার সোহেলের বাড়িতে সপরিবারে ভাড়া থাকেন পোশাক কারখানার কর্মী আসাদুল ইসলাম (৫২)। তিনি গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ থানাধীন পাঁচউলিপুর এলাকার মৃত গোলাম উদ্দিনের ছেলে। গত ২ আগস্ট তুরাগ নদীতে মাছ ধরার কথা বলে আসাদুলের ছেলে নয়নকে (১২) বাড়ি থেকে ডেকে আঙ্গুটিয়াচালা এলাকায় নিয়ে যায় প্রতিবেশী সেজু (২৪), আনন্দ (২২), বাবলু (৪০) ও শাহীন (২০)। সেখানে নৌকা থেকে নদীতে পড়ে নিখোঁজ হয় নয়ন। স্থানীয়দের সহায়তায় পরদিন তার লাশ ওই নদী থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ ব্যাপারে নৌকা থেকে নদীতে ফেলে দিয়ে যুবকদের বিরুদ্ধে নয়নকে খুন করার অভিযোগ করেন নিহতের বাবা আসাদুল ইসলাম। নয়নের লাশ গ্রামের বাড়িতে লাশ দাফন শেষে ৮ আগস্ট গাজীপুর ফিরে আসেন নয়নের বাবা আসাদুল ইসলাম। ফিরে এসে তিনি ওই চারজনের (নয়ন যাদের সঙ্গে মাছ ধরতে গিয়েছিল) বাড়িতে গিয়ে নয়নের মৃত্যুর ঘটনা জানতে যান। এসময় মামলার আসামিরা ওই চারজনের পক্ষ হয়ে নয়নের মৃত্যুর ব্যাপারে পরে তারা কথা বলবে বলে জানায়। তারা বিষয়টি নিয়ে সময়ক্ষেপন করতে থাকে। বুধবার সকালে নয়নের মৃত্যুর ব্যাপারে কথা বলতে স্ত্রী ও তিন ছেলেকে নিয়ে আসাদুল ইসলাম স্থানীয় ইলিয়াসের বাড়ীতে যান। এসময় মোজাম্মেল, আলমগীর, রুবেল, হান্নান ও বাবু তাদের উপর আক্রমন করে এলোপাথারী মারধর করে এবং বুকে লাথি মারে। এতে আসাদুল ইসলাম মাটিতে পড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। খবর পেয়ে সদর থানার পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
ওসি আরো জানান, এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী শেফালী বেগম বাদি হয়ে বুধবার রাতে পাঁচজনের নামে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ রাতেই মামলার আসামী আলমগীরকে গ্রেফতার করে। অন্য আসামীদের গ্রেফতারের অভিযান চলছে।