জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষের ¯œাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার ফলাফল সঠিক মূল্যায়নের দাবীতে বিক্ষোভ করেছে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীরা। বুধবার গাজীপুরের বোর্ডবাজারস্থিত জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে তারা এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। এসময় তারা আগামী এক মাসের মধ্যে পরীক্ষার সঠিক ফলাফল ঘোষণার দাবী জানায়।
পুলিশ ও এলাকাবাসি জানায়, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গাজীপুরের বোর্ডবাজারস্থিত জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এসে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে চট্রগ্রাম সরকারি কলেজ, বরিশাল বিএম কলেজ, তেজগাঁও কলেজ, টঙ্গী সরকারি কলেজ বরিশাল হাতেম আলী কলেজ, খুলনা বিএল কলেজ, মেহেরপুর সরকারি কলেজ, নেত্রকোনা সরকারি কলেজ ও সিদ্ধেশ^রী মহিলা কলেজসহ বিভিন্ন কলেজেরসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাণের শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষের ¯œাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার সঠিক ফলাফল ঘোষণার দাবী জানায়
ঢাকা সেন্ট্রাল ওমেন্স কলেজের সুষ্মিতা ঘোষ ও চট্রগ্রাম কলেজের ইমদাদুল হকসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, গত ২০ জুলাই ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষের ¯œাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। ফলাফলে ৭২ শতাংশ কৃতকার্য হয়। অবশিষ্ট ২৮ শতাংশ পরীক্ষার্থীকে অকৃতকার্য দেখানো হয়েছে। এ ফলাফল নিয়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দেয়। ঘোষিত ফলাফলে সাড়ে ২৪ হাজারের বেশী শিক্ষার্থীকে এক বিষয়ে অকৃতকার্য দেখানো হয়েছে। স্বশরীরে পরীক্ষায় অংশ নিলেও অনেক শিক্ষার্থীকে অনুপস্থিত দেখানো হয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী চতুর্থ বর্ষের ১০টি কোর্সের মধ্যে ৯টিতে প্রথম শ্রেণী পেলেও তুলনামূলক সহজ বিষয়ে যেমন সাংগঠনিক আচরণ, প্রকল্প ব্যবস্থাপনা ইত্যাদিতে গণহারে অকৃতকার্য দেখানো হয়েছে। যা হতাশা জনক ও লজ্জাদায়ক। আশানুরূপ ফলাফল না আসায় শিক্ষার্থীদের মাঝে অসন্তোষের সৃষ্টি হওয়ায় তারা এ ফলাফল মেনে নিতে পারছেনা। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ভালো পরীক্ষা দেওয়া সত্ত্বেও দায়সারাভাবে পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করায় বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে। এছাড়াও উক্ত শিক্ষাবর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা ২০১৯ সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও দুই বছর দেরীতে ২০২১সালে শেষ হয়। চার বছরের বিপরীতে ছয় বছর লেগে যাওয়ার কারণে শিক্ষার্থীরা অনেক পিছিয়ে পড়েছে এবং চাকুরির পরীক্ষা হতে বঞ্চিত হয়েছে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিশেষ পরীক্ষা কিংবা এসাইনমেন্ট কিংবা অনলাইন পরীক্ষার মাধ্যমে সঠিক ফলাফল আগামী এক মাসের মধ্যে ঘোষণার দাবী জানান। পূনঃনিরীক্ষণের জন্য যারা আবেদন করবে তাদের পরীক্ষার খাতাগুলো নিজ নিজ পরীক্ষা কেন্দ্রে পাঠিয়ে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় প্রতিনিধি ও নিজ কলেজের স্ব স্ব বিভাগের শিক্ষকদের মাধ্যমে খাতা মূল্যায়ণেরও দাবী জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
এ ব্যাপারে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বদরুজ্জামান জানান, শতকরা ২৮ ভাগ ফেল করার বিষয়টি সঠিক নয়। কারণ এখানে অন্ততঃ ১০ ভাগ পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে কলেজগুলো খোলা হলে দ্রুততম সময়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আর নিজ নিজ কেন্দ্রে পরীক্ষার খাতা পাঠানোর কোন নিয়ম নেই। পরীক্ষার খাতার মধ্যে পরীক্ষার্থীর নাম ও কলেজের নাম লেখা থাকে না।
এব্যাপারে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মশিউর রহমান বলেন, যেহেতু শিক্ষকদের মূল্যায়নের ভিত্তিতে পরীক্ষার রেজাল্ট প্রকাশ করা হয়েছে সেহেতু তা পরিবর্তনের সুযোগ নেই।
জিএমপি’র গাছা থানার ওসি ইসমাইল হোসেন জানান, দুপুরে আন্দোলনরত কয়েক শিক্ষার্থী বিশ^বিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বদরুজ্জামানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তিনি বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার আশ^াস দিলে শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন স্থগিত করে এলাকা ত্যাগ করেন।