বিশ্ব মহামারী করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশজুরে বন্ধ রয়েছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বন্ধ রয়েছে বেসরকারি উদ্যেগে পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোও। খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাড়া-মহল্লায় গড়ে ওঠা বেসরকারি স্কুলগুলোর শিক্ষক-কর্মচারীরা আর্থিক সংকট নিয়ে কঠিন সময় পার করছেন। প্রায় দেড় বছরের বেশি সময় ধরে স্কুল বন্ধ থাকায় আর্থিকভাবে কষ্টে আছেন তাঁরা। মহালছড়ি প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, মহালছড়ি উপজেলায় বেসরকারি প্রাইমারী স্কুল রয়েছে ১৪টি। স্কুলগুলো হলো- সিঙ্গিনালা আইডিয়াল বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাইসছড়ি চাইল্ড কেয়ার বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মহালছড়ি আদর্শ বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মহালছড়ি শিশুমঞ্চ এনজি স্কুল, উঃ মণি জ্যেতি শিশু সদন বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম ক্যায়াংঘাট বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, লেমুছড়ি শান্তিপুর বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, শান্তি নগর আদর্শ বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ক্যায়াংঘাট নতুন বাজার বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছাতি পাড়া বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মণিরামপুর বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাজাছড়া বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, উল্টাছড়ি চেয়ারম্যান পাড়া বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মুবাছড়ি কিন্ডার গার্টেন স্কুল। এসব স্কুলের শিক্ষক কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় দেড় শতাধিক । মহালছড়ি শিশু মঞ্চ এনজি স্কুলের প্রধান শিক্ষক, বিশ্বজিৎ মজুমদার বলেন, করোনা সংক্রমণ এড়াতে সরকারি নির্দেশনায় ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মাসিক বেতনটাও নেওয়া যায়নি। এছাড়া বেশিরভাগ স্কুলের বিদ্যুত বিলও দেওয়া হয়নি। বিদ্যালয়ের ফান্ডের জমানো টাকাও শেষ। তাই প্রায় দেড় বছর যাবত ১২ জন শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন বন্ধ। উপজেলা প্রশাসন থেকে এ যাবত ১ হাজার টাকা করে ২ বার পেয়েছেন। একটা পরিবারে ১ হাজার টাকা দিয়ে কি হয়। লজ্জায় কারও কাছে বলতেও পারছেন না। ফলে স্কুলগুলোর শিক্ষক-কর্মচারীরা করোনাকালে মহাকষ্টে আছেন। মহালছড়ি আদর্শ বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন জনি ও সিঙ্গিনালা আইডিয়াল বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক উনুমং মারমাও একই অভিযোগ করে বলেন, শিক্ষার্থীদের বেতনেই বেতন পান এসব স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীরা। স্কুল বন্ধ থাকার ফলে চরম সঙ্কটে রয়েছেন এসব স্কুল শিক্ষক-কর্মচারীরা। সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে সরকারি সহযোগিতার দাবি জানিয়েছেন তারা। সিঙ্গিনালা আইডিয়াল বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এসএমসি সভাপতি থুইহলাঅং মারমা’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন দিতে পারতেছিনা। ফলে শিক্ষক-কর্মচারীরা এ করোনা পরিস্থিতিতে কঠিন সময় পার করছেন। এ বিষয়ে মহালছড়ি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মঈনুল ইসলাম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বেসরকারী প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে আমাদের কোন নির্দেশনা নাই। তারপরও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অনুরোধে প্রতিবছর পাঠ্য পুস্তক দিয়ে থাকি। এছাড়া শিক্ষা অফিস থেকে আর কোন কিছুই করার নেই।
কলিন চাকমা, মহালছড়ি (খাগড়াছড়ি)সংবাদদাতা