জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত ও বন্যায় মৃতের সংখ্যা শতাধিক ছাড়িয়েছে। এছাড়া প্রায় ১৩০০ মানুষের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এ ছাড়া বন্যায় প্রতিবেশী বেলজিয়ামে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের বেশিরভাগই নর্থ রাইন-ওয়েস্টফেলিয়া ও রাইনল্যান্ড-পালাটিনেট রাজ্যের বাসিন্দা বলে জানিয়েছে। আজ শুক্রবারের প্রতিবেদনে সবশেষ এই খবর জানিয়েছে বিবিসি।
রেকর্ড বৃষ্টিপাতের পর ইউরোপের পশ্চিমাঞ্চলের নদীগুলো প্লাবিত হয়ে ওই অঞ্চলের বিপর্যয় ডেকে এনেছে। রাজনীতিবিদরা আকস্মিক এই বন্যার জন্য বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করছেন।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, দেশটির লিগে শহরের বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি ছাড়তে বলা হয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতের প্রভাব পড়েছে নেদারল্যান্ডেও। বন্যায় দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় লিবার্গ প্রদেশে অনেক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউরোপের পশ্চিমাঞ্চলে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে এসব দেশে বন্যা দেখা দিয়েছে।
রাইনল্যান্ড-পালাটিনেট রাজ্যের প্রধান মালু ড্রেয়ার ভয়াবহ এই বন্যাকে ‘বিপর্যয়’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বন্যায় অনেকের মৃত্যু হয়েছে, অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন এবং অনেকেই ঝুঁকিতে রয়েছেন। নিজেদের জীবন বাজি রেখে আমাদের সবগুলো জরুরি সেবার কর্মীরা সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছেন।’ প্রাকৃতিক এই বিপর্যয়ে হতবাক হয়েছেন বলে জানিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল।
প্রবল বৃষ্টিপাতের জেরে বুধবার থেকে জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলে ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। এতে বহু সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সরিয়ে নিতে হয়েছে বিপুল সংখ্যক মানুষকে। বন্ধ হয়ে গেছে বেশ কয়েকটি সড়ক। বন্যার কারণে রাইনল্যান্ড-পালাটিনেটের ভলকানেফেল জেলায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় নর্থ রাইন-ওয়েস্টফেলিয়ার বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে ভারী যন্ত্রপাতিসহ দুই শতাধিক সেনা পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেশী রাইনল্যান্ডে কাজ করছেন অন্তত ৭০ জন সেনা। উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছে পুলিশের বেশ কয়েকটি হেলিকপ্টারও।
বন্যার কারণে পশ্চিম জার্মানির দুই লক্ষাধিক বাড়ি বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বিঘ্ন ঘটছে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহেও। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে যানবাহন চলাচলও ব্যাপকভাবে বিঘ্ন ঘটেছে বলে জানা গেছে।
জার্মান আবহাওয়া বিভাগের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দেশটির দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত টানা বৃষ্টি ঝরবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।