এলপিগ্যাস থেকেই মগবাজারের ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে তিতাস গ্যাসের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের ভিজিল্যান্স ডিভিশনের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম চৌধুরীকে প্রধান করে গঠিত তদন্ত প্রতিবেদনটি পেট্রোবাংলার কাছে জমা দেয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্থ শর্মা হাউজ রেস্তোরাঁয় তিতাস গ্যাসের কোনও সংযোগ চালু ছিল না। সেখানে এলপিগ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করা হতো। রান্নাঘরেও সিলিন্ডার পাওয়া যায়। সরেজমিনে দেখা যায় যে স্থানে সিলিন্ডার ছিল তার পাশেই ঘটেছে মূল বিস্ফোরণ।

তদন্ত কমিটি আরও জানায়, সেখানে একটি পরিত্যক্ত রাইজারও পাওয়া গেছে। তবে রাইজারটিতে গ্যাস সংযোগ ছিল না। গ্যাস না থাকলেও সেখানে রাইজার কিভাবে গেলো এ নিয়ে প্রতিবেদনে কিছু বলা হয়নি। দুর্ঘটনার পরদিন ২৮ জুন ফায়ার সার্ভিস গ্যাস ডিটেক্টর দিয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে বলেছিল, ঘটনাস্থলে মিথেন গ্যাসের গন্ধ পাওয়া গেছে।

তিতাস তাদের ব্যাখ্যায় জানায়, দুর্ঘটনাস্থলের সামনের রাস্তায় তাদের গ্যাস পাইপলাইনটি সিটি করপোরেশনের ড্রেন নির্মানের সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেখান থেকে মিথেন গ্যাসের গন্ধ পাওয়া যেতে পারে। অথবা স্যুয়ারেজ লাইনের মধ্যে যে বায়োগ্যাস তৈরি হয় সেখান থেকেও তা ঘটনাস্থলে আসতে পারে।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, বায়ুমণ্ডলে ৬০০০ পিপিএম (পার্টস পার মিলিয়ন) ও ৩৫০০ পিপিএম গ্যাস উপস্থিত থাকার অর্থ বাতাসে যথাক্রমে ০.৬ ভাগ এবং ০.৩৫ ভাগ মিথেনের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। যেকোনও ধরনের বিস্ফোরণের জন্য বাতাসে কমপক্ষে ৫ ভাগ মিথেন থাকতে হয়। কিন্তু এখানে মিথেনের মিশ্রণ ৫ ভাগের তুলনায় অনেক কম ছিল।

সম্প্রতি জমা দেওয়া প্রতিবেদনে তিতাস জানায়, এলপিজি সিলিন্ডার ১৫০ পিএসআইজি (পাউন্ড পার স্কয়ার ইঞ্চি গ্যাস) চাপে ভরা হয়। কোনও কারণে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটলে ওই চাপ ২৫০ গুণ বেড়ে ৩৭ হাজার ৫০০ পিএসআইজি চাপের বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে।

২৭ জুন সন্ধ্যায় রাজধানীর মগবাজার ওয়ারলেসে রাখিনীড় ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।দুটি বাসেও লাগে আগুন। এতে মোট ১২ জন দগ্ধ হয়ে মৃত্যু বরণ করেন। ভবনের ভেতর ও বাইরে থাকা পথচারীসহ আহত হন শতাধিক।