আসন্ন কুরবানি ইদে দেশবাসীর কাছে নওগাঁর বদলগাছীর সেরা আকর্ষণ হিসাবে তৈরি করা হয়েছে একটি গরু। নাম তার ‘ক্যাপ্টেন’। সাদা-কালো রঙের মিশেলে ক্যাপ্টেন যেন আস্ত একটি হাতি। এই এঁড়ে গরুটির ওজন আনুমানিক ৩৮ থেকে ৪০ মণ। রাজকীয়ভাবে লালিত-পালিত ক্যাপ্টেনের মালিক মাসুদ রানা গরুটির দাম হেঁকেছেন ২০ লাখ টাকা। সাথে ক্যাপ্টেনের সহপাঠী আনুমানিক ৫ মণ ওজনের একটি বকনা গরু ফ্রি দিবেন। ক্যাপ্টেন তার সাথী বকনা গরু ছাড়া একেবারেই একা থাকতে চায় না। তাই ক্যাপ্টেনের সাথে সাথী বকনা গরু ফ্রি ঘোষণা করা হয়েছে।

উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের জগদিশপুর গ্রামের গবাদি পশু-পাখির খাবার বিক্রেতা মাসুদ রানা সখের বসে গরুটি লালন পালন করেন। মাসুদ রানা জানায়, ২ বছর আগে জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবিহাট থেকে ৮৭ হাজার টাকায় কেনেন ফ্রিজিয়ান জাতের একটি এঁড়ে গরু। তার ইচ্ছে ছিল এক বছর লালন পালন করে কুরবানির ইদে বিক্রয় করবেন। গত কুরবানিতে ঢাকা থেকে এক শিল্পপতি এসে সাড়ে ৯ লাখ টাকা দাম করেছিলেন। কিন্তু বয়স না হওয়ায় গরুটি আর কেনেন নি। ঠিকমতো লালন পালন করে এ বছর দাম ঠিক করেছের ২০ লাখ টাকা।

মাসুদ রানা আরো জানান, কেনার পর থেকেই সন্তানের মতো করে ক্যাপ্টেনকে লালন পালন করেছেন। প্রতিদিন অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি আপেল, কমলা ও মাল্টা খেতে দেন। নিয়মিত খাবারের মধ্যে আছে সুজি, ভুসি ও খুদের ভাত। বর্তমানে প্রতিদিন তিন কেজি আপেল, কমলা ও মাল্টা খায় ক্যাপ্টেন। প্রতি মাসে সাড়ে তিন মণ সুজি, সাড়ে তিন মণ ভুসি ও তিন মণ খুদ খেতে দিতে হয় তাকে। কেনার পর থেকে এখন পর্যন্ত ২ বছর ২ মাসে ক্যাপ্টেনের পেছনে খরচ করতে হয়েছে ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা। এই গরমে প্রতিদিন দের ঘণ্টা করে তিনবার গোসল করাতে হয়। গরম সহ্য করতে পারে না, তাই বিদ্যুৎ চলে গেলে আইপিএস দিয়ে ফ্যান চালানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। ক্যাপ্টেনকে দেখতে হাতির মত দেহাবশেষ। তার ওজন এখন ৩৮ থেকে ৪০ মণ। বাড়ির দরজা অনেক বড় তার পরেও এই দরজা দিয়ে ক্যাপ্টেন বের করা যায় না। বিক্রির পর দরজা ভেঙ্গে তাকে বের করতে হবে। প্রতিদিন দূরদুরান্ত থেকে উৎসুক লোকজন গরুটি এক নজর দেখার জন্য ভীড় করে বাড়িতে। ক্যাপ্টেনকে দেখার পর লোকজন অবাক হয়ে যায়। এতো বড় গরু কিভাবে লালন পালন করা সম্ভব।
মাসুদ রানা আরো বলেন, অনেক যত্ন করে লালন পালন করেছি ক্যাপ্টেনকে। মন মতো দাম পেলে বাড়ি থেকেই বিক্রি করবো। ২০ লাখ টাকায় বিক্রি করার ইচ্ছা আছে। তবে বাজার মূল্য অনুসারে ক্যাপ্টেনকে ছেড়ে দিব।

মাসুদ রানার স্ত্রী রাবেয়া বেগম বলেন, আমার স্বামী অনেক সৌখিন মানুষ। নিজের সন্তানের মতো করে গরুটি লালন পালন করেছে। গরুটি যেন আমাদের পরিবারের একজন সদস্য। গরুটিও আমাদের খুব আপন করে নিয়েছে। ওকে বিক্রি করলে খুব কষ্ট লাগবে। কিন্তু বিক্রি তো করতেই হবে। সেক্ষেত্রে যদি ভালো দাম পাই তাহলে কষ্ট কিছুটা কমবে। যোগাযোগের ঠিকানা: জয়পুরহাট হয়ে জামালগঞ্জ বাজারের পাশ্বে কোল্ড স্টোরেজ সংলগ্ন জগদিশপুর গ্রাম মাসুদ রানা গো-খাদ্যের দোকান। এছাড়া বগুড়া-দুপচাঁচিয়া, আক্কেলপুর হয়ে জামালগঞ্জ আসা যায়। (মাসুদ রানা মোবা- ০১৭২৪ ৫৪৬৩৫৪)।

মোঃ খালেদ বিন ফিরোজ