জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ৩ হাজার ৮৯ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ব্যয়ে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি ও কমলনগর উপজেলার বড়খেরী ও লুধুয়াবাজার এবং কাদের পন্ডিতের হাট এলাকা ভাঙ্গন থেকে রক্ষাকল্পে মেঘনা নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলানগর এনইসি সভাকক্ষে একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এই প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে সভায় যুক্ত হন।
সভাশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি জানান, একনেকে ৫ হাজার ২৩৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ে মোট ৯টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্প ব্যয়ের ৫ হাজার ৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকা পাওয়া যাবে সরকারি তহবিল থেকে এবং বাকী ২৪৯ কোটি ৯৩ লাখ বৈদেশিক ঋণ থেকে ব্যয় করা হবে।
পরিকল্পামন্ত্রী বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ফেব্রুয়ারি ২০২১ হতে জুন ২০২৫ মেয়াদে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি ও কমলনগর উপজেলাধীন বড়খেরী ও লুধুয়াবাজার এবং কাদের পন্ডিতের হাট এলাকা ভাঙ্গন থেকে রক্ষাকল্পে মেঘনা নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
তিনি আরও বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি ও কমলনগর উপজেলাধীন কৃষি জমি, বাজার, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, সড়ক ও বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অবকাঠামো ভাঙ্গণের হাত থেকে রক্ষা পাবে। একইসাথে ১৫ হাজার হেক্টর এলাকা পরিবেশগত উন্নয়নের মাধ্যমে জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটবে।
তিনি জানান, প্রকল্পের আওতায় মেঘনা নদীর বামতীর বরাবর ভাঙ্গন কবলিত ৩১ দশমিক ৩২ কিলোমিটার প্রতিরক্ষা কাজ বাস্তবায়ন করা হবে।
একনেকে অনুমোদন পাওয়া ২৩৭ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের নবসৃজিত নারায়ণগঞ্জ ব্যাটালিয়নের অবকাঠামোগত বিভিন্ন স্থাপনা বিষয়ক প্রকল্পের বিষয়ে এম এ মান্নান বলেন, ‘ঢাকার আশেপাশে দেশের সিংহভাগ শিল্প কারখানা অবস্থিত। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ শিল্পায়নের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য সেখানকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই বিজিবির নতুন ব্যাটালিয়ন রাখা হচ্ছে। শিল্প পুলিশ থাকলেও মাঝে মধ্যে অন্য বাহিনীর সহায়তার প্রয়োজন হয়। সেই চিন্তা থেকেই এটি করা হচ্ছে।’
একনেকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পসমূহ হলো- কুষ্টিয়া-মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ আঞ্চলিক মহাসড়কটির কুষ্টিয়া হতে মেহেরপুর পর্যন্ত যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প, এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৪৩ কোটি টাকা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাকাশ অবলোকন কেন্দ্র প্রকল্পে ব্যয় হবে ২১৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। বাংলাদেশ ইকোনমিক জোনস ডেভলপমেন্ট প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৮১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের ব্যয় হবে ৮৮ কোটি টাকা। দরিদ্র মহিলাদের জন্য সমন্বিত পল্লী কর্মসংস্থান সহায়তা প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়; এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৪৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। মাতারবাড়ী আণ্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ারড পাওয়ার প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৩২ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এছাড়া উপজেলা পর্যায়ে মহিলাদের জন্য আয়বর্ধক প্রশিক্ষণ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৩০৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা।