গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্কে বিলুপ্ত প্রায় পাখি মদনটাকের পরিবারে দুই অতিথির জন্ম হয়েছে। তিনটি ডিমের মধ্যে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় দ্বিতীয় ডিম ফুটে বাচ্চার জন্ম হয়।
পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী বন সংরক্ষক তবিবুর রহমান জানান, আগে এ পার্কে ৭টি মদনটাক ছিল। এরমধ্যে একটি মদনটাক সম্প্রতি তিনটি ডিম দেয়। দু’দিন আগে একটি ও শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আরেকটি ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। আরেকটি ডিম ফুটলে এ পার্কে মদনটাকের সংখ্যা ৯ থেকে বেড়ে ১০টিতে দাঁড়াবে। বাচ্চাগুলো যেন বেঁচে থাকে সেজন্য প্রয়োজনীয় যতœ নেওয়া হচ্ছে। এর আগে বিগত ২০১৭সালের ডিসেম্বরে তিনটি মদনটাকের ছানার জন্ম হয়েছিল।
সাফারী পার্কের ওয়াইল্ড লাইফ সুপারভাইজার (বন্যপ্রাণী পরিদর্শক) আনিছুর রহমান বলেন, এ পাখি সাধারনত বড় বিলের কাছে, নদীর মোহনায় বসবাস করে থাকে। তবে সারা বিশ্বে এর দেখা মেলা ভার। স্থানীয় ভাবে অনেকেই মদনটাক পাখিকে হারগিলাও বলে থাকে। মদনটাক প্রধানত জলচর পাখি হিসেবে পরিচিত। এরা সিকোনিডাই পরিবারভূক্ত বিধায় অন্যান্য প্রজাতির ন্যায় এরও নগ্ন ঘাড় এবং মাথা রয়েছে। এরা মাছ, ব্যাঙ, সরীসৃপ এবং অন্যান্য মেরুদন্ডী প্রাণী ভক্ষণ করে থাকে। প্রজনন মৌসুম ব্যাতীত একাকী নিভৃতচারী পাখি হিসেবে এরা পরিচিত। ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত এরা বাসা বাঁধে। ডালপালা দিয়ে তৈরী বাসায় স্ত্রী মদনটাক ৩-৪টি পর্যন্ত ডিম দেয়। ২৮/৩০দিন পর ডিম থেকে ছানার জন্ম হয়। এরা তেমন কোন আওয়াজ করে না। এদের ওজন হয় ৫/৭কেজি পর্যন্ত।
তিনি আরো বলেন, মদনটাকের মূল অস্তিত্ব দক্ষিন এশিয়া জুড়েই। বাংলাদেশে বিলুপ্ত প্রায় হলেও সুন্দরবনের প্রাকৃতিক পরিবেশে মাঝে মধ্যে এর দেখা মেলে। ইতোমধ্যেই সিঙ্গাপুর ও চীন থেকে এরা বিলুপ্ত হয়ে গেছে।