র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) নতুন অতিরিক্ত মহাপরিচালকের (অপারেশনস) দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন কর্নেল কে এম আজাদ। মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি বিদায়ী কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ারের স্থলাভিষিক্ত হলেন। এর আগে গত ৯ মার্চ সেনাবাহিনী থেকে প্রেষণে র্যাবে যোগ দেন কর্নেল কে এম আজাদ। র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, কর্নেল কে এম আজাদ ৩২তম বিএমএ লং কোর্সের সঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পদাতিক কোরে কমিশন লাভ করেন। তিনি সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট ও সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ পদে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ‘কর্নেল’ পদবিতে বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টাল সেন্টার (বীর) এর ব্যাটালিয়নের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
কে এম আজাদ একটি পদাতিক ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন ছাড়াও সেনাসদরের সামরিক গোয়েন্দা পরিদপ্তরের স্টাফ অফিসার, স্কুল অব ইনফ্যান্ট্রি অ্যান্ড ট্যাকটিকসের প্রশিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন।
এছাড়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন চৌকস অফিসার হিসেবে তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশন কঙ্গোতে মিলিটারি অবজারভার এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশন আইভেরিকোস্ট, ব্যানবাট-৩ এ কর্মরত ছিলেন। চাকরির ধারাবাহিকতায় তিনি গত ২৫ আগস্ট ২০১৯ তারিখে কর্নেল পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত হন।
কর্নেল আজাদ ইতিপূর্বে র্যাব ফোসের্সে অত্যন্ত সুনাম ও সাফল্যের সঙ্গে চাকরি করেছেন। সর্বশেষ তিনি র্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরের পরিচালক, অপারেশনস্ উইং এর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি র্যাব-২ এর অধিনায়ক হিসেবেও নিযুক্ত ছিলেন। এছাড়া তিনি গোয়েন্দা শাখার উপ-পরিচালক, র্যাব-৭ এর উপঅধিনায়ক এবং কোম্পানী কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। র্যাবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি সুন্দরবনে জলদস্যু আত্মসমর্পণ এবং হলি আর্টিজান জঙ্গি হামলা মোকাবেলায় এবং অন্যান্য আভিযানিক কর্মকাণ্ডে প্রশংসনীয় অবদান রেখেছেন।
কে এম আজাদ র্যাবে কর্মরত থাকাকালীন অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, আভিযানিক কর্মকাণ্ড, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা ও শৃঙ্খলামূলক আচরণের মাধ্যমে প্রশংসনীয় অবদানের জন্য ২০১৫ সালে বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (বিপিএম)- সেবা’য় ভূষিত হন।
কর্নেল আজাদ ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড এন্ড স্টফ কলেজ (ডিএসসিএসসি) হতে আর্মি স্টফ কোর্স, পিএসসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ক্রিমিনোলজি এন্ড ক্রিমিনালজাস্টিস এ মাস্টার্স ডিগ্রি, বাংলাদেশ মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এমআইএসটি) থেকে এমবিএ এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালস (বিইউপি) থেকে এমডিএস (মাস্টার্স অফ ডিফেন্স স্টাডি) অর্জন করেন।
কর্নেল কে এম আজাদ দেশ ও বিদেশে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে আর্মি স্টাফ কোর্স ছাড়াও গোয়েন্দা কোর্স এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বিষয়ক কোর্স সম্পন্ন করেন। এছাড়া তিনি তুরস্ক হতে ল্যান্ড অপারেশন টার্মিনোলজি কোর্স সম্পন্ন করেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, তুরস্ক, পোল্যান্ড, ফ্রান্স, রাশিয়ায় প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য সরকারি কর্তব্যে গমন করেন।
কর্নেল কে এম আজাদ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পরিসরের প্রশিক্ষক, কমান্ড ও স্টাফ অভিজ্ঞতা সম্পন্ন একজন চৌকস অফিসার। তিনি কর্মক্ষেত্রে অত্যন্ত সততা, পেশাদারিত্ব, পারদর্শিতা, উৎকর্ষতা ও বিচক্ষণতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে সুনাম অর্জন করে আসছেন।