চাঁদপুরে আজ সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে ইলিশের পোনা-জাটকা সংরক্ষণে ‘অভয়াশ্রম কর্মসূচি’। আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে। ফলে মাছ শিকারে দুই মাসের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে চাঁদপুরে পদ্মা ও মেঘনা নদী। এ দুই মাস পদ্মা-মেঘনার অভয়াশ্রম এলাকায় সব ধরনের জাল ফেলা বন্ধ থাকবে। এর ফলে বন্ধ থাকবে সব ধরনের মাছ ধরা, বিক্রি ও বিপণন।
যদিও ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাটকা সংরক্ষণে ২০০৬ সাল থেকে চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনা নদীর ৯০ কিলোমিটার এলাকাসহ দেশের পাঁচটি অঞ্চলে এ কর্মসূচি চলে আসছে। এই নির্দিষ্ট সময়ে কেউ মাছ শিকার করলে তার বিরুদ্ধে জেল-জরিমানারও বিধান করেছে সরকার।
এই কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে এ বছর সর্বাধিক পৌনে ছয় লাখ টন ইলিশ উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে বলে জানিয়েছেন চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইলিশ গবেষক ড. আনিছুর রহমান। তিনি আমাদের সময়কে বলেন, সব নদ-নদীতে ইলিশের নিরাপদ বিচরণ নিশ্চিত করতে পারলে আমরা কাক্সিক্ষত সফলতা পাব। গত বছরও প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টন ইলিশ উৎপাদন হয়েছিল। তাই আমরা আশা করছি, এ বছর যদি সম্মিলিতভাবে সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনে চলি, তা হলে পৌনে ছয় লাখ টন ইলিশ উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে চাঁদপুরের নদীতীরবর্তী এলাকা, মৎস্য আড়ত ও জেলেপাড়াগুলোয় মাইকিং, লিফলেট বিতরণ ও পোস্টার করা হয়েছে। সবাইকে সতর্কও করা হয়েছে। এ ছাড়া দুই মাসের এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য সম্প্রতি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে টাস্কফোর্স কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ সবাইকে আন্তরিক হয়ে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান। জেলা প্রশাসক বলেন, ইলিশ আমাদের জাতীয় সম্পদ। এটি রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সবার। তাই যার যার অবস্থান থেকে সচেতন হলে এই সম্পদ রক্ষা করা কষ্টসাধ্য হবে না। তবে জেলা টাস্কফোর্সের সদস্যরা ২৪ ঘণ্টা নজরদারি অব্যাহত রাখবেন বলে তিনি আশ^স্ত করেন।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুল বাকী জানান, অভয়াশ্রম মৌসুম উপলক্ষে চাঁদপুরে সরকারি তালিকাভুক্ত জেলেদের প্রত্যেককে ৪০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। এর পরও যদি কেউ আইন না মেনে নদীতে নামেন, তা হলে তাদের ছয় মাস থেকে সর্বোচ্চ দুই বছর সশ্রম কারাদ- এবং সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে।