গাজীপুরে কাভার্ডভ্যান ভর্তি সুতা লুট করতে চালককে গলা কেটে খুন করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরি, হত্যার পর লুট করে নিয়ে যাওয়া কাভার্ডভ্যান এবং ১২২ বস্তা সুতা শনিবার উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- রংপুর জেলার কোতয়ালী থানার দেওয়ান টুলি এলাকার মোঃ মনোয়ার হোসেনের ছেলে নাজমুল হোসেন (২২) এবং গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার আটাবহ এলাকার মানিক চন্দ্র সরকারের ছেলে গকুল চন্দ্র সরকার ওরফে বকুল সরকার (৩০)।
জিএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ জাকির হাসান জানান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের ৫নং গেইট এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশ থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ের এক ব্যাক্তির গলা কাটা লাশ বৃহষ্পতিবার ভোরে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে নিহতের স্ত্রী সাহেদা বেগম খবর পেয়ে লাশটি তার স্বামী কাভার্ড ভ্যান চালক মুন্নাফ সরকার (৫০) বলে সনাক্ত করেন। মুন্নাফ কুমিল্লার হোমনা থানার হরিপুর গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। তিনি স্বপরিবারে গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুর থানাধীন মোজার মিল এলাকার ভাড়া বাসায় থাকেন। বুধবার ভোরে নারায়ণগঞ্জ যাওয়ার কথা বলে মুন্নাফ সরকার বাসা থেকে বের হন। পরদিন তার গলাকাটা লাশ ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান এলাকা হতে উদ্ধার করা হয়। স্বামী খুন হওয়ার ঘটনায় সাহেদা বেগম জিএমপি’র সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
তিনি জানান, পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার ধামরাই এলাকা থেকে ছিনতাইকৃত কাভার্ডভ্যানটি উদ্ধার করে। পুলিশ আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ শুক্রবার মধ্যরাতে গাজীপুরের কাশিমপুর থানাধীন জিরানী এলাকা থেকে আসামী গকুল চন্দ্র সরকার ওরফে বকুলকে (৩০) গ্রেফতার করে। এসময় তার হেফাজত থেকে লুন্ঠিত ১২২ বস্তা সুতা উদ্ধার করা হয়। পরে গকুলের তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার ভোর রাতে হত্যাকান্ডের প্রধান আসামি নাজমুল হোসেনকে (২২) গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়। শনিবার দুপুরে ৭দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে গ্রেফতারকৃতদের আদালতে পাঠানো হলে আদালত তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে।
তিনি আরো জানান, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানা এলাকার নান্নু স্পিনিং মিল থেকে কাভার্ডভ্যান যোগে ১২২ বস্তা সুতা নিয়ে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রার উদ্দেশ্যে বুধবার রওয়ানা হন চালক মুন্নাফ। পথে পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে ৩জন বাসন থানাধীন ভোগড়া বাইপাস এলাকা থেকে ওই কাভার্ডভ্যানে ওঠে। একপর্যায়ে চালক মুন্নাফকে কাভার্ডভ্যানের ভিতরেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। পরে হত্যাকারীরা লাশটি ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের ৫নং গেইট এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে ফেলে রেখে সুতা ভর্তি কাভার্ডভ্যানটি নিয়ে পালিয়ে যায়।
এসময় জিএমপি’র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার থোয়াই অং প্রু মারমা, সদর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) রাফিউল করিম ও ইন্সপেক্টর (অপারেশন) জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন।