রাজধানীর দারুস সালাম থানার কোনাবাড়ি বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে শনিবার (২৩ জানুয়ারি) রাতে গ্রেপ্তার আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নব্য জেএমবি সদস্য মিনহাজ হোসেনের (৩৮) ঢাকায় বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা ছিলো বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) বিভাগ।
রোববার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এমনটি জানান ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. ওয়ালিদ হোসেন। কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগ বলছে, তুরস্কের আন্তর্জাতিক উগ্রবাদী সংগঠন হায়াত তাহরির আল শামের (এইচটিএস) সদস্যদের সঙ্গে তার যোগাযোগ রয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে একথা স্বীকার করেছেন তিনি। তিনি ও তার পলাতক সহযোগীরা নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন নব্য জেএমবির আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে ঢাকায় নাশকতা সৃষ্টির পরিকল্পনায় দারুস সালামে মিলিত হয়েছিলো।
ওয়ালিদ হোসেন জানান, গ্রেপ্তার মিনহাজ হোসেন নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির অংশ নব্য জেএমবির সক্রিয় সদস্য। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে সিরিয়া থেকে তুরস্ক হয়ে বাংলাদেশি নাগরিক দেশে অনুপ্রবেশ করেছে। রাষ্ট্র বিরোধী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে কথিত খিলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য বিভিন্ন সহিংস উগ্রবাদী জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নাশকতার পরিকল্পনা করছে। তখন থেকেই তাকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের জন্য গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় শনিবার দারুস সালাম এলাকা থেকে মিনহাজকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ জানায়, গ্রেপ্তার মিনহাজ উগ্রবাদী ভাবাদর্শে দীক্ষিত হয়ে আন্তর্জাতিক উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা শুরু করে। এ উদ্দেশ্যে সে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সিরিয়া যাওয়ার জন্যে তুরস্কে যায়। তুরস্কে থাকাকালীন তিনি সন্ত্রাসী সংগঠন হায়াত তাহরির আল শামের (এইচটিএস) সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে সিরিয়া গমনের চেষ্টা করে। কিন্তু সিরিয়ায় প্রবেশ করতে না পেরে তুরস্ক থেকে ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে দেশে ফিরে আসে।
দেশে ফিরে খুলনা গিয়ে আত্মগোপন করেন মিনহাজ। দেশে অবস্থানরত সন্ত্রাসী সংগঠন নব্য জেএমবির সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। নব্য জেএমবি সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে মিলিত হয়ে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের চেষ্টা চালান তিনি। বাংলাদেশে কথিত খিলাফত প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা করেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ আরো জানায়, গ্রেপ্তার মিনহাজ বংশানুক্রমে বাংলাদেশের নাগরিক। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করার পর কিশোর বয়সেই পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে পাকিস্তান চলে যান। সেখানেই বড় হন। পরে পাকিস্তান থেকে তার পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। এছাড়াও, তিনি বিভিন্ন সময়ে মালয়েশিয়া, ব্রুনাই, পাপুয়া নিউগিনিসহ একাধিক দেশ ভ্রমণ করে ২০১৭ সালে বাংলাদেশে ফিরে আসেন।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার মিনহাজের বিরুদ্ধে দারুস সালাম থানায় মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার মিনহাজকে রিমান্ড চেয়ে রোববার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।