জার্মানির বার্লিনে বসবাতরত মুক্তিযোদ্ধা মো. তারেকের মরদেহ বার্লিনের ভেডিং এ তার নিজ বাসা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ ও দমকল বাহিনী। স্থানীয় সময় আজ সোমবার সকালে মো. তারেকের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে যায়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। বার্লিনে বসবাসরত মো. তারেকের ঘনিষ্ঠজনেরা গত কয়েকদিন ধরে মো. তারেকের কোনো খোঁজ খবর না পাওয়ায় পুলিশে খবর দেয়। পরে দমকল বাহিনীর সহায়তায় তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
তবে স্থানীয় পুলিশ ও হাসপাতাল কতৃপক্ষ মৃত্যুর সঠিক কারণ আপাতত উল্লেখ না করলেও ধারণা করা হচ্ছে স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়াই তার মৃত্যুর কারণ হতে পারে। তার মৃত্যুর বিষয়টি বার্লিনের বাংলাদেশ দূতাবাসকে অবহিত করা হয়েছে। এদিকে বার্লিনের তার বন্ধু ও ঘনিষ্ঠরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে তিনি ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপসহ নানা রোগে ভুগছিলেন।
উল্লেখ্য, তিনি স্বাধীনতাপূর্ব বাংলাদেশের বাংলাদেশ আওয়ামী ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নিতে প্রতিবেশী দেশ ভারত যান গেরিলা ট্রেনিং নিতে। যুদ্ধে অংশগ্রহণ শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া অবস্থায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর একান্ত ইচ্ছায় উচ্চশিক্ষার্থে বৃত্তি নিয়ে পাড়ি দেন তৎকালীন পূর্ব জার্মানিতে। ভর্তি হন জার্মানির মেকলেনবুর্গ ফরপমার্ন-এর রোস্টক এর একটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে তিনি পড়াশুনা করেন প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং বিষয়ে।
পড়াশুনা শেষে বসবাস করতে শুরু করেন রাজধানী বার্লিনে। তবে এই বীর মুক্তিযোদ্ধা নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করতেন। জীবনে বিয়েও করেননি। মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিলেও কখনো নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সরকারি কোনো সুবিধার দাবি জানাননি। পাননি কোনো স্বীকৃতি বা সংবর্ধনাও।
মো. তারেকের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে তার দীর্ঘদিনের পরিচিত সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বেঙ্গালীশে কুলটুর ফোরামসহ বিভিন্ন সংগঠন ও সর্বস্তরের প্রবাসীরা। বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জের কটিয়াদিতে জন্ম নেওয়া মুক্তিযোদ্ধা মো. তারেকের দেশে থাকা পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তার মরদেহ সৎকারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে জানান বার্লিনের তার কাছের স্বজনরা।