বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জনপ্রিয় অভিনেতা মুজিবুর রহমান দিলু মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানী ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুর বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন তার বড় ভাই অভিনেতা আতাউর রহমান।
মঙ্গলবার ভোরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘আমার ছোট ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা, কীর্তিমান মঞ্চ ও টেলিভিশন অভিনেতা মুজিবুর রহমান দিলু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে আজ সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে এই পৃথিবীর মায়া ছেড়ে অসীমের যাত্রী হয়েছেন।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘সে জীবন যুদ্ধে যেমন ছিল এক পরাক্রান্ত সৈনিক, তেমনি ছিল এক বর্ণিল জীবনের অধিকারী। তার আত্মার চির শান্তি কামনাই দেশবাসীদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা।’
এর আগে জানুয়ারির শুরুর দিকে ফুসফুসের সংক্রমণ নিয়ে উত্তরার একটি হাসপাতালে ভর্তি হন ৬৯ বছর বয়সী মুজিবুর রহমান দিলু। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তার আগে ২০০৫ সালে গুলেন বারি সিনড্রোমে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন কোমায় ছিলেন দিলু। পরে তিনি সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবন-যাপন শুরু করেন। তিনি শান্ত মরিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাহী পরিচালক পদে কর্মরত ছিলেন।
স্ত্রী রানী রহমান, দুই ছেলে অয়ন রহমান, অতুল রহমান ও এক মেয়ে তানজিলা মুজিবকে নিয়ে ঢাকার উত্তরায় থাকতেন এই অভিনেতা।
বিটিভিতে প্রচারিত হুমায়ূন আহমেদের ‘সংশপ্তক’ নাটকে বড় মালু চরিত্রে অভিনয় করে আলোচিত হন মজিবুর রহমান দিলু। অনেকে তাকে বড় মালু নামেই চেনেন।
তার উল্লেখযোগ্য মঞ্চনাটক হচ্ছে ‘আমি গাধা বলছি’, ‘নানা রঙ্গের দিনগুলি’, ‘জনতার রঙ্গশালা’, ‘নীল পানিয়া’, ‘আরেক ফাল্গুন’, ‘ওমা কী তামাশা’ প্রভৃতি। এছাড়া বাংলাদেশ টেলিভিশনের জনপ্রিয় নাটক ‘তথাপি’, ‘সময় অসময়’ ও ‘সংশপ্তক’–এ অভিনয়ের মধ্য দিয়ে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন মজিবুর রহমান দিলু।
মুজিবুর রহমান দিলুর জন্ম ১৯৫২ সালের ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামে। মঞ্চ থেকে অভিনয় জীবন শুরু করে ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে অভিনয় শিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ১৯৭৬ সাল থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশনে নিয়মিত অভিনয় করছেন। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি বেশ কিছুদিন অভিনয় থেকে দূরে ছিলেন।