গাজীপুরে গার্মেন্টস কর্মকর্তাকে অপহরণ করে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় অপহরণকারী এক দম্পতিসহ চারজনকে আটক করেছে র্যাব-১’র সদস্যরা। এসময় তাদের কাছ থেকে চাপাতি, চাকু, মোবাইল ফোন ও নগদ টাকাসহ টাকা লেনদেন কাজে ব্যবহৃত সীমকার্ড জব্দ করা হয়েছে। বুধবার র্যাব-১’র স্পেশালাইজ কোম্পানী পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার লেঃ কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল-মামুন এ তথ্য জানিয়েছেন।
আটককৃতরা হলো- গাজীপুর মহানগরের বাসন থানাধীন চানপাড়া এলাকার বাবুল হাওলাদারের ছেলে সবুজ হাওলাদার (৩৩), সবুজের স্ত্রী শারমিন আক্তার (২৫), কাশিমপুর থানাধীন গোবিন্দবাড়ি এলাকার আবুল হাসেম ওরফে হাসুর ছেলে রাসেল মিয়া (৩০) ও একই থানার সারদাগঞ্জ এলাকার নুর মিয়ার ছেলে হাফিজুর ইসলাম (৩২)।
র্যাব-১’র ওই কর্মকর্তা জানান, গোপালগঞ্জের মোকসেদপুর থানার আদমপুর এলাকার আবুল বাশারের ছেলে রুহুল আমিন (৪৫) গাজীপুরের কাশিমপুর থানাধীন সারাবো এলাকায় থেকে এক গার্মেন্টস কারখানায় কর্মকর্তা পদে চাকুরি করেন। গত ২৫ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি কালিয়াকৈরের চন্দ্রায় যেতে বাসের জন্য কাশিমপুরের চক্রবর্তী এলাকায় অপেক্ষা করছিলেন। এসময় কয়েক অপহরণকারী তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে একটি মাইক্রোবাসে তুলে অপহরণ করে কালিয়াকৈরের মৌচাক এলাকার একটি শাল বাগানের ভিতরে নিয়ে যায়। অপহৃত গার্মেন্টস কর্মকর্তাকে সেখানে গাছের সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে এবং তার কাছে থাকা মোবাইল ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয় তারা। পরে খুন করে লাশ গুম করার হুমকি দিয়ে অপহৃতের পরিবারের কাছে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে অপহরণকারীরা। তারা অপহৃতের পরিবারের কাছ থেকে তিনটি বিকাশ নম্বরের মাধ্যমে এক লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
পরে অপহৃত রুহুল আমিনকে গাছের সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় রেখে অপহরণকারীরা চলে যায়। এ সুযোগে বাঁধন খুলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে প্রাণ রক্ষা করেন তিনি। পরদিন কাশিমপুর থানায় একটি জিডি করা হয়। অপহৃতের পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১’র সদস্যরা মঙ্গলবার রাতে মহানগরীর টঙ্গী পশ্চিম থানার গাজীপুরা এলাকা হতে এ ঘটনায় জড়িত অপহরণকারী দলের সবুজ ও তার স্ত্রী শারমিনকে আটক করে। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপর দু’সদস্য রাসেল ও হাফিজুরকে কাশিমপুর এলাকা হতে আটক করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি চাপাতি, দুইটি চাকু, ১০টি মোবাইল ফোন, বিকাশের মাধ্যমে টাকা লেনদেনের কাজে ব্যবহৃত ৮টি সীম কার্ডসহ নগদ দুই হাজার একশ’ টাকা জব্দ করা হয়।
তিনি আরো জানান, আটককৃতরা অপহরণকারী দলের সদস্য। তারা দীর্ঘদিন যাবৎ পরস্পর যোগসাজশে দেশীয় গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকা হতে মাইক্রোবাসে যাত্রী পরিবহনের নামে সু-কৌশলে অপহরণ করে বিভিন্ন জনকে আটক রেখে শারীরিক নির্যাতনসহ খুন করার হুমকি দিয়ে ভিকটিমদের সঙ্গে থাকা নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়াসহ বিকাশের মাধ্যমে তাদের পরিবারের নিকট হতে মুক্তিপন হিসেবে লাখ লাখ টাকা আদায় করে আসছিল বলে আটককৃতরা জানিয়েছে।