অবৈধ উপায়ে চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ১০ হাজার ২০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠা প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলে সহায়তা চাওয়া হয়েছে। সোমবার হাইকোর্টে দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে।
এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর জজ আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। আদালত থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির কপিটি সংযুক্ত করেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ইন্টারপোলে চিঠি পাঠানো হয়। দুদকের হাইকোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘পরশু এই মামলায় দিন ধার্য রয়েছে।’
দুদক সূত্র জানায়, পিকে হালদারকে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনতে গত মাসে দুদকের মানিলন্ডারিং শাখা থেকে একটি চিঠি ইন্টারপোলে পাঠানো হয়। এরপর তারা কিছু বিষয়ে জানতে চিঠিটি ফেরত পাঠায়। পিকে হালদার সপরিবার কানাডায় আছেন। ইন্টারপোলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দুদককে জানান, পিকে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হলে আদালত থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আদেশ সংযুক্ত করে দিতে হবে। এরপর দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চেয়ে আদালতে আবেদন করেন।
দুদকের একজন মধ্যমসারির কর্মকর্তা বলেন, পিকে হালদারকে দেশে ফেরত আনা এবং তার পাচার করা টাকা দেশে ফেরত আনতেই আমরা ইন্টারপোলে চিঠি পাঠিয়েছিলাম।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রাথমিক অনুসন্ধানে কানাডা, সিঙ্গাপুর ও ভারতের বিভিন্ন শহরে পিকে হালদারের পাচার করা ৬৫০ কোটি টাকার সম্পদের তথ্য-উপাত্ত পেয়েছে। শুধু কানাডার টরন্টোতেই মার্কেট, বাড়ি, ফ্ল্যাট, গাড়ির শোরুম, চেইন শপসহ প্রায় ৩০০ কোটি টাকার সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদকের অনুসন্ধানসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। পাশাপাশি সিঙ্গাপুরে ১০০ কোটি, ভারতে ১৫০ কোটি ও আমিরাতে ১০০ কোটি টাকার সম্পদ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় জালিয়াতি করে চারটি লিজিং কম্পানি থেকে হাতিয়ে নেয়া পিকে হালদারের হাজার কোটি টাকার সম্পদের তথ্য-প্রমাণও পেয়েছে দুদক। অবৈধ ক্যাসিনোকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দুদক অনুসন্ধান করতে গিয়ে নাম আসে পিকে হালদারের।