মীর আনিস/ফরিদপুর সংবাদদাতা: ফরিদপুর জেলার অর্ন্তগত মধুখালী পৌরসভা ১১ই অক্টোবর ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে পৌরসভাটি গঠিত হয়। পৌরসভার আয়তন ১২.০০ বর্গ কিলোমিটার, ভোটার সংখ্যা : প্রায় ২৪,০৩২ (পুরুষ ১২,০৪৯, মহিলা- ১১,৯৮৩ জন। এটি একটি ‘খ’ শ্রেণির পৌরসভা। প্রথম মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন খন্দকার মোরশেদ রহমান লিমন। তিনি উন্নয়নমূলক অনেক কাজ করেছেন। তারপরও রয়ে গেছে কিছু সমস্যা। এসব নিয়ে প্রথম পৌর মেয়র হিসেবে নিজের সফলতা ও ব্যর্থতার কথা জানাতে দৈনিকবার্তার মুখোমুখি হয়েছিলেন আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী খন্দকার মোরশেদ রহমান লিমন। জানালেন সফলতা,ব্যর্থতা ও আগামী দিনের পরিকল্পনার কথা।
লিমন জানান মধুখালী বাজারের ভেতরের রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ করেছি। বিভিন্ন ওয়ার্ডের ড্রেন ও রাস্তা নির্মাণ এবং কিছু কিছু রাস্তা প্রশস্তের কাজ করেছি এবং কিছু কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। পৌর এলাকায় শতভাগ স্যানিটেশন ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৭টি পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করেছি। চলমান প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে মধুখালী পৌরসভা একটি আধুনিক শহরে রূপ নেবে। পৌর এলাকাকে আলোকিত করেছি।
মাদকের সমস্যা পুরোপুরি দূর করতে না পারার কথা স্বীকার করে মেয়র বলেন, এখানে প্রতিনিয়ত মাদক ব্যবসায়ী এবং মাদক সেবনকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হয়। প্রশাসনের তৎপরতা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদক, সন্ত্রাস ও যৌন হয়রানিসহ অপরাধ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করায় এসব অপরাধ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এছাড়া মাদকের বিরুদ্ধে পৌরসভা থেকে অনেকগুলো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। চাঁদাবাজি, ছিনতাই এবং ইভটিজিংয়ের মতো অপরাধের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা তৈরি করতে বিভিন্ন এলাকায় সভা-সমাবেশ অব্যাহত রয়েছে।
পৌরসভায় ঘুষ-দুর্নীতি প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ‘পৌরভবন শতভাগ ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত। এখানে কোনো দুর্নীতি হয়নি। ঘুষ এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমি কঠোর অবস্থানে ছিলাম।
শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার মান উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের শতভাগ উপস্থিতি নিশ্চিত করতে প্রতিষ্ঠানের প্রধান এবং কমিটির সদস্যদের সঙ্গে নিয়মিত বসা হয়েছে। এছাড়া যে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে সহযোগিতা করেছি। স্বাস্থ্যসেবার মান খুবই নাজুক ছিল। হাসপাতাল ছিল, কিন্তু ডাক্তার থাকত না।
মানুষ চিকিৎসা নিতে এসে খুব কষ্ট পেত। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনার মাধ্যমে হাসপাতালে চিকিৎসকের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে পেরেছি। এখন সাধারণ মানুষ অনায়াসে স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারছেন।’
আগামী পৌর নির্বাচনে নির্বাচিত হলে জনগণকে কী প্রতিশ্রুতি দেবেন- এই প্রশ্নের জবাবে খন্দকার মোরশেদ রহমান লিমন বলেন, আগামী নির্বাচনের জন্য পৌরবাসীর কাছে আমার একাধিক প্রতিশ্রুতি রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হল-সুপেয় পানির ব্যবস্থা, শিশুদের জন্য পার্ক নির্মাণ, শিক্ষিত হার বাড়ানোর চেষ্টা, নি¤œ আয়ের মানুষদের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা এবং শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা। রাজস্ব আয় বাড়ানোর জন্য পৌর মার্কেট নির্মাণ।
লিমন বলেন জলাবদ্ধতা, পানি নিষ্কাশন, ময়লা-আবর্জনা, মশার উপদ্রব, সড়কে কুকুরের উপদ্রব, রাস্তা-ফুটপাথ-খাল দখল; মাদক, সন্ত্রাস- এ সমস্যাগুলো হয়তো পুরোপুরি দূর করতে পারিনি। সফলতা ও ব্যর্থতা নিয়েই মানুষের পথ চলতে হয়। আগামী পৌর নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হলে জনগণকে সাথে নিয়ে মধুখালী পৌরসভার সকল সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবো।
তিনি আরও বলেন শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে ও চলমান পৌরসভার উন্নয়ন মুলক কাজ এগিয়ে নেওয়ার জন্য নৌকা প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন।
আগামী ১০ ডিসেম্বর নির্বাচন।