কুয়াকাটা পৌর আওয়ামীলীগে হাইব্রীডদের দৌরাত্ম ও নি¤œচাপে বিভক্তিসহ বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ছে দলের সর্বত্র ও তৃনমূল পর্যায়ে। আসন্ন পৌর নির্বচনকে কেন্দ্র করে এ বিভক্তি আরো প্রকট আকার ধারন করেছে। দলের পরীক্ষিত ও ত্যাগী নেতাকর্মীরা হয়ে পড়েছে একেবারেই কোটঠাসা। একাধিক মামলায় আসামী হয়েছে বহু নেতা-কর্মী। উড়ে এসে জুড়ে বসা এসব হাইব্রীডদের অনৈতিক কর্মকান্ডে বিব্রত মাঠ পর্যায়ের সাধারন নেতা-কর্মীসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ। স্থানীয় তৃনমূল নেতা-র্মীদের অভিমত, সাংগঠনিক উদ্যোগ না নিলে আসন্ন পৌর নির্বাচনসহ স্থানীয় রাজনীতিতে এর বড় ধরনের প্রভাব পড়বে।
স্থানীয় সূত্র ও দলের একাধিক দ্বায়িত্বশীল নেতা, মামলা-হামলার ভয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই জানায়, পর্যটন নগরী কুয়াকাটার উন্নয়নের জন্য ২০১০ সালের ১৫ ডিসেম্বর লতাচাপলী ইউনিয়কে বিভক্ত করে কুয়াকাটা পৌরসভা এবং পরবর্তীতে মহিপুর থানা ঘোষনা করা হলে আওয়ামীলীগের দূর্গখ্যাত এ এলাকায় রাজনীতিতে আসে ভিন্নতা। সুযোগ বুঝে দলে প্রবেশ করে বিভিন্ন দলের সুবিধাভোগী নেতা-কর্মীরা। এসব হাইব্রিড ও অনুপ্রকেবশকারীদের অনেকেই সরকারী খাস জমির ভূয়া খতিয়ান তৈরি ও বিক্রির সাথে জড়িত। জমির দালাল ও দখলকারী এসব ভূইফোর, কালো টাকার মালিকরা টাকা সাদা করে বনে গেছেন কোটি কোটি টাকার মালিক। অবৈধ বানিজ্যসহ নিজের সুরক্ষায় ক্ষমতার পালাবদলে হাইব্রিডরা এভাবেই দল বদলের সুযোগ নেয়।
স্থানীয় সূত্রের বরাতে আরো জানা যায়, জাতীয়পার্টির হয়ে জাতীয়সংসদ নির্বচনের পর আওয়ামীলীগে যোগদানকারী আনোয়ার হাওলাদার ২০১৫ সালে জাতীয়পার্টির টিকিট নিয়ে নির্বাচন করেছে। বর্তমানে আওয়ামীলীগের টিকিট প্রাপ্তির প্রত্যাশায় দৌড়ঝাপ প্রক্রিয়া শুরু করেছেন, আগামী পৌর নির্বাচনে টিকিট প্রাপ্তিতে ব্যর্থ হলে অপেক্ষাকৃত দুর্বল দলীয় প্রার্থী দিয়ে নিজে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে জয়লাভ করার প্লান-পরিকল্পনা হাত নিয়েছেন।
কুয়াকাটা পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি মজিবুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু, আওয়ালীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামীলীগের কঠোর সমালোচনাকারীরা এসব হাইব্রীডরা এখন জয় বাংলা শ্লোগান দেয়। বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার আহবায়ক দাবী করে বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা, স্থানীয় সাংসদসহ জেলা নেতৃবৃন্ধের ছবি দিয়ে পোস্টার ব্যানার ছাপায়। ছাত্রনেতা সাদ্দাম হোসেন বলেন, হাইব্রীডদের বিরোধীতা করে ছাত্রলীগ সভাপতি মজিবরসহ ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি ইউসুব হাওলাদর, দুলাল শিকদার, আবৃুল হোসেন ফরাজী, নিজাম বেপারী, আসাদুজ্জামান কবির, আমির হোসেন, আবুল হোসেন একাধিক মামলার আসামী হয়েছেন।
কুয়াকাটা পৌর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি শাহজাহান হাওলাদার, জাফর মুন্সী বলেন, আওয়ামীলীগে যোগ দিলেও দলীয় সদস্য পদ না পাওয়া হাইব্রীডরা নিজের আধিপত্য বিস্তারে ব্যাপকভাবে মরিয়া হয়ে উঠেছে। পৌর নির্বাচনে নৌকার টিকিট পাওয়ার আশায় ইতিমধ্যে দলের মধ্যে বিভক্তি-বিভাজন তৈরি করেছেন।
কুয়াকাটা পৌরমেয়র ও আওয়ামীলীগ সভাপতি আ: বারেক মোল্লা বলেন, অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে দল কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
পটুয়াখালী জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ভিপি আ: মান্নান বলেন, সদ্য দলে অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে খোজ-খবর নিয়ে তাদের বিষয়ে কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে এবং দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে যে বা যারা বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী, স্থানীয় সাংসদসহ জেলা নেতৃবৃন্ধের ছবি দিয়ে পোস্টার-ব্যানার করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে।