নীলফামারীর ডিমলা থানা পুলিশের বিরুদ্ধে কৃতিত্ব অর্জনের লোভে ও বাহবা পেতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার করে মিথ্যে তথ্য প্রচারের অভিযোগ উঠেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়,উপজেলার গয়াবাড়ী ইউনিয়নের শুটিবাড়ী বাজার এলাকার ব্যবসায়ী মোস্তাক আহমেদ খানের একমাত্র পুত্র সন্তান সিয়াম খান (১২) ও ডাবলু মৃধার ছোট ছেলে রাকিব মৃধা (১২) গত ২২সেপ্টেম্বর বাড়ি থেকে খেলার কথা বলে বেড়িয়ে গিয়ে নিখোঁজ হয়। পরিবারের লোকেরা তাদের অনেক খোঁজাখুঁজি করে সন্ধান না পেয়ে পরেরদিন ২৩শে সেপ্টেম্বর ডিমলা থানায় সাধারণ ডায়েরি নং-৯৩৭,তারিখ ২৩/৯/২০২০ইং রুজু করেন।এক পর্যায়ে সিয়াম না ফিরলেও শিশু রাকিব গত মঙ্গলবার(৬ অক্টোবর)সকালে একাই নিজ বাড়িতে ফিরে আসে।পরে তার পরিবার ডিমলা থানা পুলিশকে রাকিবের ফিরে আসার বিষয়ে অবগত করলে পুলিশ অপর নিখোঁজ শিশু সিয়ামের ব্যাপারে রাকিবের কাছে তথ্য নেয়ার কথা বলে তাকে থানায় ডেকে আনেন। রাকিবের বাবা সেদিন ঢাকায় থাকার সুবাদে রাকিবকে তার মা আনোয়ারা বেগম নিজেই বিকেলে থানায় নিয়ে উপস্থিত হলে তাদের সাথে নিয়ে ডিমলা থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম ও ওসি(তদন্ত)সোহেল রানা বেশকিছু ছবি ক্যামেরাবন্দী করেন।পরে রাতে ওই ছবি ও নাম-ঠিকানা সহ ডিমলা থানা নীলফামারী নামের একটি ফেসবুক পেজে এবং ওসি ডিমলা থানার ফেসবুক আইডি থেকে পোষ্টের মাধ্যমে শিশু রাকিব কে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অতি কষ্টে উদ্ধারের পর তার মায়ের নিকট বুঝিয়ে দেবার দাবি করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়।
ফিরে আসা শিশু রাকিবের মা আনোয়ারা বেগম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, আমার ছেলের মোবাইল ফোন নেই।সে নিখোঁজের ১৬দিন পর গত মঙ্গলবার সকালে একাই বাড়িতে ফিরে এসেছে।পরে পুলিশ রাকিবকে থানায় নিয়ে যেতে বলায় বিকেলে আমি তাকে সাথে করে থানায় নিয়ে গেলে সেখানে আমাদের ছবি তোলা হয়।একই কথা বলেন, শিশুটির বাবা ডাবলু মৃধা।
শিশু রাকিব বলেন,আমি মোবাইল ব্যবহার করিনা। আমি ও আমার বন্ধু সিয়াম দুজনে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে ঢাকার এক বাড়িতে মাস্ক তৈরীর কাজ করতাম।আমি বাড়ি ফেরার কয়েকদিন আগে সিয়াম সেখান থেকে অন্যত্রে পালিয়ে যাওয়ায় ওই বাড়ির মালিক আমাকে ঢাকা থেকে ট্রেনে উঠিয়ে দিয়ে হাতে দুইশত টাকা ধরিয়ে দিয়ে পাঠিয়ে দেন।পরে ট্রেন এক স্থানে এসে থেমে যাওয়া(জায়গার নাম বলতে পারেনি)আমি গাড়িতে করে একাই বাড়িতে ফিরে আসি।
এ ব্যাপারে ডিমলা থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম বলেন,আমরা শিশুটির অবস্থান জানতে পেরে ঢাকায় লোক পাঠিয়ে তাকে উদ্ধার করি।এ ঘটনায় অপর নিখোঁজ শিশুকেও উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে প্রশ্ন উঠেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ডিমলা থানা পুলিশের একটি পোষ্টেই যদি এত তথ্যগত গড়মিল পাওয়া যায় তবে দীর্ঘদিন যাবত যে নিয়মিত তথ্য পোষ্ট দেয়া হত না নিয়েও?
সুজন মহিনুল, বিশেষ প্রতিনিধি।।