রাজশাহী মহানগর নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আয়োজনে নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে ঘন্টাকালব্যাপি এই মানববন্ধন থেকে সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের দ্বারা স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষন এবং খাগড়াছড়িতে মানসিক ভারসাম্যহীন আদিবাসী নারীকে গণধর্ষনের সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী জানানো হয়। রাজশাহী নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আহবায়ক অধ্যাপক ড. আখতার হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, রাজাশাহী মহানগর বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক রাসিক মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসন বুলবুল।
বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন, মহানগর বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিউল হক রানা, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা যুদলের সভাপতি মোজাদ্দেদ জামানী সুমন, মহানগর যুবদলের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সুইট, সেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জাকির হোসেন রিমন ও সাধারণ সম্পাদক আবেদুর রেজা রিপন।
এছাড়াও মহানগর মহিলা দলের যুগ্ম আহবায়ক এ্যাডভোকেট রওশন আরা পপি, অধ্যাপিকা সখিনা খাতুন, গুলশান আরা মমতা, রোজি, নারী নেত্রী রিতা, রোমেনা ও ডেইজী, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রবি, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি আসাদুজ্জামান জনি, সিনিয়র সহ-সভাপতি মুর্তুজা ফামিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আকবর আলী জ্যাকি জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি রবিউল ইসলাম কুসুমসহ বিএন,ি অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি বুলবুল ও বিশেষ অতিথি মিলন বলেন, এই সরকারের আমলে কোন নারী, মেয়ে ও কন্যা শিশু নিরাপদ নয়। ছয় মাস থেকে বৃদ্ধ নারী পর্যন্ত সরকারের দোসর ও প্রধানমন্ত্রীর সব থেকে প্রানপ্রিয় সংগঠন এবং আস্থাভাজন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ছোবল থেকে রক্ষা পাচ্ছেনা। আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোহিগ সংগঠনের নেতকার্মীরা একের পর ধর্ষন করেই যাচ্ছে। কেউ আবার এই কাজে সেঞ্চুরী করে তা উদ্যাপন করছে। তার বলেন, ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৩১৩৬ জন নারী ও শিশু ধর্ষনের শিকার হয়েছে। আর ২০১৯ সাল পর্যন্ত বিচার হয়েছে মাত্র ১৬৪টি। ২০১৯ সালে শিশু ধর্ষিত হয়েছে ১০০৫ জন। গড়ে প্রতিদিনি ৩জন করে শিশু ধর্ষনের শিকার হচ্ছে। এরমধ্যে ৪৭জন শিশুকে গণধর্ষনের পর হথ্যা করা হয়েছিলো বলে উল্লেখ করেন তারা।
তারা আরো বলেন, ২০১৮ সালে শিশু ধর্ষনের ঘটনায় দেশে কমপক্ষে ৫৭১টি মামলা হয়েছে। বক্তারা বলেন, ২০১৯ সালে মোট ১৪১৩ জন নারী ধর্ষনের শিকার হয়। এর মধ্যে ৭৬ জন ধর্ষনের পরে হত্যা এবং ১০জন নিজেই আত্মহত্যা করে। তারা বলেন, ২০১৮ সালের থেকে ২০১৯ সালে ধর্ষনের সংখ্যা দ্বিগুন ছিলো। বক্তারা আরো উল্লেখ করেন বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির তথ্য মতে চলতি বছরের জানুয়ারী মাস থেকে আগষ্ট পর্যন্ত বিভিন্ন পত্রিকার মাধ্যমে তারা এই ধর্ষন ও হত্যা নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরী করেন। সেখানে চলতি বছরের জানুয়ারী থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত ৯৮২টি ধর্ষনের ঘটনা ঘটেছে বলে উল্লেখ করা হয়। এরমধ্যে ৪১ জন ধর্ষনের পর আহত হয়ে মারা যায়, আর ৯জন আত্মহত্যা করে।
তারা বলেন, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী ও দুস্কৃতিকারী নেতাকর্মীরা প্রতিনিয়ত দেশে বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম করে গেলেও প্রধানমন্ত্রী নিরব থাকেন। কারন বিনা ভোটের সরকারের কোন নৈতিকতা থাকেনা। যদি আল্লাহকে ভয় করত তাহলে জোর করে রাতের অন্ধকারে দলীয় সন্ত্রাসী ও আইনশৃংখলা বাহিনীকে দিয়ে ভোট জালিয়াতী করে ক্ষমতায় আসতো না। বর্তমান সরকার চায় শুধু ক্ষমতা। জনগণ ধর্ষীত, খুন, গুম হলে এবং না খেয়ে মরে গেলেও তার কোন চিন্তা নাই। কারন এই সরকার প্রধান চায় শুধু রক্ত। সেইসাথে তার নেতাকর্মীও তারই পথ অনুসরন করে চলছে। তারা বলেন, দেশে কোন প্রকার বিচার নাই। এই বিচারহীনতার কারনেই প্রতিনিয়ত এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। যথাযথ আইনের প্রয়োগ ও ধর্ষনকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে এই ধরনের ঘটনা ঘটতনা বলে জানান তারা। তারা এমসি কলেজের ঘটনাসহ সকল ধর্ষনের সুষ্ঠু বিচার চান, এবং ধর্ষনকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান।