বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে উভয় দেশের নিরস্ত্র নাগরিকদের হত্যা, আহত করা কিংবা মারধরের ঘটনা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার সিদ্ধান্তে একমত জানিয়েছে দুই দেশের বিজিবি-বিএসএফ বাহিনী প্রধানরা।শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) এর মধ্যে মহাপরিচালক পর্যায়ে ৫০ তম সীমান্ত সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্তে একমত হন বিজিবি’র মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম ও বিএসএফ’র মহাপরিচালক (ডিজি) রাকেশ আস্থানা।
বিএসএফ’র ডিজি রাকেশ আস্থানা বলেন, ‘আমরা বেশ কিছু বিষয়ে একমত হতে পেরেছি। সীমান্তে উভয় দেশের নিরস্ত্র নাগরিকদের হত্যা, আহত করা কিংবা মারধরের ঘটনায় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করবো। করোনাকালীন সময়ে সীমান্তবর্তী এলাকায় যৌথ টহল পরিচালনা বন্ধ থাকলেও বর্তমানে টহল বৃদ্ধি, জনসচেতনামূলক কর্মসূচি এবং সীমান্তে অতিরিক্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণে আমরা উভয় পক্ষ একমত হয়েছি।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী নাগরিকদের মাঝে আন্তর্জাতিক সীমানা আইনে বিধি-বিধান সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারলে সীমান্তের আক্রমণ বা হামলা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব।
বিএসএফ মহাপরিচালক বলেন, সীমান্তে যেসকল অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে তার ৭০ শতাংশ ক্রিমিনাল অ্যাক্টিভিটি জন্য হয়ে থাকে। আর সবগুলোই প্রায় রাত ১০ টা থেকে সকাল ৭টার মধ্যে হয়। বাংলাদেশ আমাদের বন্ধু দেশ। এ দেশের সীমান্তের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে। এ সব অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে যে সকল পদক্ষেপ নেয়া দরকার সেগুলো আমরা নেব।
এ সময় বিজিবি’র ডিজি মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম বলেন, আমরা উভয় পক্ষের সীমান্তে অস্ত্র, গোলাবারুদ, বিস্ফোরকদ্রব্য, মাদক, স্বর্ণ এবং জাল মুদ্রা পাচার প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিব। পূর্ব অনুমোদন ছাড়া ১৫০ গজের মধ্যে কোন ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ না করার বিষয়ে পারস্পরিক সম্মতি দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিদের অনুপ্রবেশ জোরপূর্বক পুশ ইন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ব্যাক্তিদের জাতীয়তা যাচাই করতে এবং একে অপরের সহযোগিতায় তাদের হস্তান্তর গ্রহণ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। সেই সঙ্গে মানবপাচার রোধে উভয় দেশ যৌথভাবে কাজ করবে। সেই সঙ্গে অননুোমিদভাবে অভিন্ন সীমান্ত নদীর তীর সংরক্ষণ না করতে উভয়ে সম্মত হয়েছি।
উল্লেখ্য, সীমান্ত সম্মেলন (১৬-১৯ সেপ্টেম্বর) ১৭ সেপ্টেম্বর বিজিবি সদর দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে শুরু হয়েছে। শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সম্মেলনের যৌথ আলোচনার দলিল (ঔজউ-ঔড়রহঃ জবপড়ৎফ ড়ভ উরংপঁংংরড়হং) স্বাক্ষরের মধ্যদিয়ে সীমান্ত সম্মেলন শেষ হয়।