লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ফোন দিয়ে ডেকে নিয়ে গিয়ে নিজের বাল্যবিয়ে বন্ধ করা শাহিনা আক্তার নামে সেই ছাত্রীকে পুরস্কৃত করলেন জেলা প্রশাসক আবু জাফর।
সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে তাকে নগদ ১৫ হাজার টাকা ও বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী বই উপহার দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইউএনও সামিউল আমিন, উপজেলা চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুন, সির্ন্দুনা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরল আমিন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ফেরদৌস আহম্মেদ ও সমাজসেবা কর্মকর্তা মাহবুব আলম।
শাহিনা আক্তার হাতীবান্ধা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণির ছাত্রী ও ওই উপজেলার উত্তর ধুবনী গ্রামের সাইরুদ্দিনের মেয়ে।
সম্প্রতি শাহিনা আক্তারকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বাল্যবিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন তার বাবা-মা। উপায় না পেয়ে শাহিনা বাড়ি থেকে পালিয়ে তার এক বান্ধবীর বাড়িতে আশ্রয় নেয়। বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পেতে প্রথমে হাতীবান্ধা থানার ওসি এরশাদুল আলমকে ফোন করে সহযোগিতা চান ওই ছাত্রী। তার কাছে তেমন সহযোগিতা না পেয়ে হাতীবান্ধার ইউএনও সামিউল আমিনকে ফোন করে বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পেতে সহযোগিতা কামনা করেন।
এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে নড়েচড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসন। পরে ইউএনও সামিউল আমিন হাতীবান্ধা থানার ওসি এরশাদুল আলমকে সাথে নিয়ে প্রথমে বান্ধবীর বাড়ি থেকে শাহিনাকে উদ্ধার করেন। পরে ইউএনও নিজ গাড়িতে করে শাহিনাকে নিয়ে তার বাড়িতে হাজির হন। এ সময় তার বাবা সাইরুদ্দিনের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আইয়ুব আলীর জিম্মায় দেন শাহিনাকে।
হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সামিউল আমিন জানান, শাহিনা আক্তার নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকিয়ে আমাদের সমাজকে বুঝিয়ে দিয়েছেন নারীরা সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে চায়। আর যেন একটি মেয়েরও বাল্যবিয়ে না হয় সেজন্য আমাদের সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে।