খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে বিগত এক সপ্তাহ ধরে মারমা কিশোরী ধর্ষণের ঘটনায় অবশেষে ভিকটিম এর পিতা বাদী হয়ে ৭ সেপ্টেম্বর সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় মহালছড়ি থানায় মামলা করেছে। স্থানীয় নতুন পাড়া গ্রামের বাসিন্দা আলিম উদ্দিন এর ছেলে আল আমিন(২৭)এর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা দায়ের এর পরপর মহালছড়ি থানা পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ৮ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে চট্টগ্রাম এর সীতাকুণ্ড এলাকা থেকে এজাহারের উল্লেখিত প্রধান আসামি আল আমিনকে আটক করতে সক্ষম হয়।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, ৬/৭ মাস পূর্ব হতে মহালছড়ি আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ূয়া এক মারমা ছাত্রীর সাথে অভিযুক্ত আল-আমিনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে । পরে আল-আমিন ৩১আগস্ট সন্ধ্যায় প্রেমিকা (ভিকটিম)কে মহালছড়ি থলিপাড়া গ্রামস্থ খাগড়াছড়ি রাংগামাটি সড়কের পূর্ব পার্শ্বে রাবার বাগানে যেতে বলে। আল আমিন এর কথামতো ভিকটিম রাবার বাগানে পৌঁছলে সেখানে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা কথিত প্রেমিক আল-আমিন ও অজ্ঞাতনামা ৩জন সহ ৪ জন মিলে মুখ চেপে ধরে জোর পূর্বক নির্জন জায়গায় নিয়ে যায়। এ সময় ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ভিকটিমের কোমরের বাম পাশে ও বাম হাতের কনুইতে এবং কপালে আঘাত লেগে অজ্ঞান হয়ে পরে। সেইদিনই রাত আনুমানিক ৩ টার দিকে ভিকটিমের জ্ঞান ফিরে আসলে টিলাপাড়াস্থ উলাপ্রু ক্যায়াং এর সামনে ভিকটিম নিজেকে দেখতে পায় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়। সেখান থেকে ভিকটিম ক্যায়াং এর পাশে তার স্কুলের সহকারী শিক্ষক প্রনয় প্রান্ত এর বাড়িতে আশ্রয় নেয় । তখন শিক্ষক তার আত্মীয় স্বজনকে ফোন দিলে তারা উদ্ধার করে নিয়ে যায় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মহালছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জাহাঙ্গীর মামলা দায়ের এর বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০৩ এর ৯(৪)এর (খ) ১০/৩০ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। মামলা রেকর্ড হওয়ার পর পর মহালছড়ি থানা থেকে বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ টিম পাঠানো হয় এবং উক্ত মামলার প্রধান আসামি আল আমিনকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড এলাকা থেকে আটক করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট সন্ধ্যা ৭ টায় মহালছড়ি আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক ছাত্রী প্রেম ঘটিত সম্পর্কের জের ধরে লুকিয়ে দেখা করতে গিয়ে ধর্ষণ হওয়া বা না হওয়া এবং সালিশী বৈঠকের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকায় সমাধান নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন মিডিয়াতে ব্যাপক আলোচনার ঝড় ওঠে।
মিল্টন চাকমা কলিন, (মহালছড়ি) খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি