এবার ভারত থেকে আসছে নতুন মাদক ডিয়ালাক্স। এটি ফেনসিডিলের মতো উপকরণে তৈরি। ফলে সাধারণ মানুষের কাছে নতুন হলেও মাদক ব্যবসায়ী ও মাকদকাসক্তদের কাছে পরিচিত। গত ২১ আগস্ট রাত নয়টার দিকে ভারতীয় সীমান্তের ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার মাধবখালী থেকে ২১ বোতল এ ডিয়ালাক্স উদ্ধার করে মহেশপুর ৫৮ বিজিবি। এর এক মাস আগেও বিজিবি ৪৩ বোতল ডিয়ালাক্স উদ্ধার করেছিল। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভারতের ‘রেড্ডিস ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড’-এর তৈরি এ সিরাপটি কফ ও ঠান্ডাজনিত সমস্যার জন্য তৈরি। এতে কোডিন মরফিনের মতো মাদকের উপাদান রয়েছে। ভারতে ঠান্ডাজনিত সমস্যার জন্য ব্যবহৃত হলেও বাংলাদেশে এটি মাদক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। একইভাবে ঠান্ডা-কাশির সিরাপ ভারতীয় ফেনসিডিল মাদক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে দীর্ঘদিন। যে কারণে বাংলাদেশে ফেনসিডিল বহন ও সেবন নিষিদ্ধ। তারপরও পুলিশ, র‌্যাব ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে হাজার হাজার ফেনসিডিল আসে এদেশে। এর উল্লেখযোগ্য অংশ আটকও হয়। এরইমধ্যে এক মাসের ব্যবধানে দুইবার নতুন মাদকদ্রব্য ডিয়ালাক্স আটক হওয়ায় ভাবিয়ে তুলেছে সংশ্লিষ্টদের। গত ১৯ আগস্ট ভারত সীমান্তের মহেশপুর থেকে ৪৭৫ বোতল ফেনসিডিলসহ একজনকে আটক করে জেলার গোয়েন্দা পুলিশ। এর আগে ৮ আগস্ট মহেশপুর ব্যাটালিয়ন (৫৮ বিজিবি) ৮৬ বোতল ভারতীয় মদ ও ৭ আগস্ট মহেশপুর থেকে ১৯৮ বোতল ফেনসিডিলসহ দুই মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে। এভাবে শুধুমাত্র চলতি আগস্ট মাসের ২৩ দিনে মহেশপুর ৫৮ বিজিবি ২৫টি ছোট-বড় মাদকের চালান আটক করেছে। যার মধ্যে নতুন মাদকদ্রব্য ডিয়ালাক্স পাওয়া যায়। মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনাকারী বিজিবি ও র‌্যাব সূত্রে জানা গেছে, গেল বছরের ৩ ডিসেম্বর ঝিনাইদহের ৫৮ বিজিবি ২৫ হাজার ৯১৬ বোতল ফেনসিডিল, দুই হাজার ৫০২ বোতল ভারতীয় মদ, সাড়ে তিন লিটার বাংলা মদ, ৫০ কেজি গাঁজা ও ইয়াবা ধ্বংস করে। ধ্বংস করা এসব মাদকদ্রব্য ওই বছরের এপ্রিল থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত সীমান্তবর্তী সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আটক করা হয়। ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার প্রায় ৫৭ কিলোমিটার ভারতীয় সীমান্ত রয়েছে। এরমধ্যে প্রায় ১১ কিলোমিটার রয়েছে কাঁটাতারবিহীন। ওই এলাকাজুড়ে রয়েছে কোদলা নদী। ঝিনাইদহ সীমান্তে মাটিলা, লেবুতলা, মোকদ্দাসপুর, সামান্তা, বাদ্দেরআঁটি, কচুরপোতা, বাঘাডাঙ্গা, খোসালপুর, আন্দুলিয়া, বর্নিশাহপুর, শ্রীনাথপুর, জলুলী ও যাদবপুর সীমান্ত এলাকা দিয়ে মূলত রাতের অন্ধকারে এসব মাদকদ্রব্য বাংলাদেশে ঢুকানো হয়। স্থানীয়দের মতে, প্রতিদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে যা আটক হচ্ছে তার থেকে ঢের বেশি মাদক সংশ্লিষ্টদের চোখ ফাঁকি দিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পৌঁছে দিচ্ছে চোরাকারবারীরা। ঝিনাইদহ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিদর্শক আমিরুল ইসলাম জানান, ‘ডিয়ালাক্স মাদকটি আমাদের দেশে একেবারেই নতুন। যে কারণে এ সম্পর্কে না জেনে কিছু বলা যাচ্ছে না। বিস্তারিত জেনে পরে জানাবেন বলে তিনি বলেন। তবে, মহেশপুর ৫৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম খান বলছেন, ফেনসিডিলের মতো উপাদানে তৈরি হয় ডিয়ালাক্স।