সদ্য পদত্যাগকারী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ডা. আবুল কালাম আজাদকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারে নির্দেশনা চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) ই-মেইল ও কুরিয়ারের মাধ্যমে এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আজ শুক্রবার এ নোটিশটি পাঠান ন্যাশনাল ল-ইয়ার্স কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এস এম জুলফিকার আলী জুনু।
আইনি নোটিশে বলা হয়, ‘স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা এত চরমে পৌঁছেছে যে, অধিকাংশ কোভিড হাসপাতালের লাইসেন্সের মেয়াদ নেই বলে জানা গেছে। করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই দুর্নীতি শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক ডিজির (আবুল কালাম আজাদ) আশীর্বাদপুষ্টদের কাছে করোনা যেন আশীর্বাদ। স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী যেমন পিপিই, মাস্ক, ওষুধ সরবরাহ দিয়ে, এর শুরু বলা যায়।এসব অনিয়ম কর্তৃপক্ষের এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ কী আছে?’
এতে বলা হয়, ‘করোনাকালেও স্বাস্থ্য সুরক্ষার সামগ্রীর কেনাকাটায় দুর্নীতি চরমে। এর দায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পদত্যাগকারী সাবেক ডিজি এড়াতে পারেন না। করোনা মহামারির এই সংকটকালে পুরো জাতি যখন ভীষণভাবে উদ্বিগ্ন, যখন প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে, যখন সরকারি হিসেব মতে দৈনিক প্রায় ৪০ জন করে করোনা রোগী মারা যাচ্ছেন। তখন স্বাস্থ্যখাতের অব্যবস্থাপনা ও দায়িত্বহীনতা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধের শামিল।’
নোটিশে বলা হয়, ‘স্বাস্থ্যখাতের জবাবদিহিতাহীন দুর্নীতির দায় অবশ্যই সদ্য পদত্যাগকারী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজিকে বহন করতে হবে। জেকেজি ও রিজেন্ট হাসপাতালের প্রতারণা ও রিজেন্ট হাসপাতালের চুক্তি স্বাক্ষরের দায় অবশ্যই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে নিতে হবে।’
এতে হয়, ‘২০১৪ সাল থেকেই রিজেন্ট হাসপাতালের লাইসেন্স অবৈধ জানার পরেও হাসপাতালটিতে করোনা টেস্ট ও চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরর কীভাবে চুক্তি করলো? ওই চুক্তি অনুষ্ঠানে খোদ স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য সচিবসহ কয়েকজন সচিব এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ আরও অনেকে উপস্থিতি ছিলেন বলে আমরা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে দেখতে পেয়েছি। এই ধরনের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে মন্ত্রীর উপস্থিতি থাকার প্রটোকল নেই।’
এ আইনি নোটিশের মাধ্যমে স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতি, অনিয়ম ও প্রতারক সাহেদকে অবৈধ সুযোগ প্রদানের দায়ে ডা. আবুল কালাম আজাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করে ফৌজদারি কার্যবিধির সুনির্দিষ্ট বিধান মতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার অনুরোধ জানানো হয়। অন্যথায় জনস্বার্থে যথাযথ নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট দায়ের করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়।