জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম খুনি এম এ রাশেদ চৌধুরীর রাজনৈতিক আশ্রয়ের মামলাটি আবার চালু করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার। রাজনৈতিক ওয়েব পত্রিকা পলিটিকোর বিশেষ একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র আবার এই মামলা খতিয়ে দেখার উদ্দ্যোগ নিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মাসে উইলিয়াম বার অনেকটা গোপনে বহুল আলোচিত এই মামলাটি পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্ত নেন। প্রায় ১৫ বছর আগে নিষ্পত্তি হওয়া এই মামলা এখন আবার চালু করে রাশেদ চৌধুরীকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দিতে চায় ট্রাম্প প্রশাসন। এতে বলা হয়েছে, বার প্রথমেই রাশেদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের অনুমতি বাতিল করতে চাইবেন। তাতে সফল হলে শুরু হবে ফেরতের প্রক্রিয়া।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাশেদ চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকায় অবস্থান করছেন। হত্যাকাণ্ডের ২৩ বছর পরে ১৯৯৮ সালে নিম্ন আদালতের রায়ে অন্য আসামিদের সঙ্গে পলাতক অবস্থায় তাকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ২০০৯ সালে উচ্চ আদালত ১২ জন কর্মকর্তার মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ছয়জনের রায় কার্যকর হলেও রাশেদ চৌধুরীসহ বিদেশে পলাতক অন্যদের দণ্ড কার্যকর হয়নি।
এতদিন বাদে এই মামলা আবার চালুর খবর পলিটিকোকে নিশ্চিত করেছেন রাশেদের আইনজীবীরা। রাশেদের আইনজীবী মার্ক ভ্যান ডের হাউট সংবাদমাধ্যমটিকে বলেন, অনেক আগে শেষ হওয়া একটি মামলা নিয়ে তারা কেন এমন করছে সেটিই আমাদের কাছে প্রশ্ন। তবে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং মার্কিন প্রশাসনের কেউ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
১৯৯৬ সালে রাশেদ তার পরিবার নিয়ে ভ্রমণ ভিসায় আমেরিকায় যান। দুই মাসের মধ্যে তারা রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেন। প্রায় দশ বছর পর তিনি সেই অনুমতি পান। এরপর বাংলাদেশ নানাভাবে তাকে দেশে ফেরানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মাস থেকে পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করে। ১৭ জুন অ্যাটর্নি জেনারেল বার ‘বোর্ড অব ইমিগ্রেশন আপিল’কে রাশেদের মামলাটি তার কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হন বঙ্গবন্ধু। এ ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১২ আসামির মধ্যে পাঁচজনের দণ্ড ২০১০ সালের জানুয়ারিতে কার্যকর করা হয়। একজন ২০০১ সালে জিম্বাবুয়েতে মারা যান। বাকি ছয় আসামি পলাতক। তাদের মধ্যে নুর চৌধুরী কানাডায় এবং রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে আছেন।