মাস্ক, পিপিই ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সরঞ্জাম ক্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগে তলব করা হলেও দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) যাননি ঢাকা সেন্ট্রাল ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালের চেয়ারম্যান মো. মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠু। লেক্সিকোন মার্চেন্ডাইজ ও টেকনোক্র্যাট লিমিটেডের কর্ণধার এই মিঠুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছিলো সংস্থাটি। কিন্তু বৃহস্পতিবার তিনি কমিশনে হাজির না হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন জানিয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন দুদকে। দুদকের জনসংযোগ কার্যালয় বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এদিকে মেডিটেক ইমেজিং লিমিটেডের পরিচালক মো. হুমায়ুন কবিরকে একই অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুদক। সকাল ১০টা থেকে বিকাল তিনটা পর্যন্ত কমিশনের পরিচালক ও অনুসন্ধান দলের প্রধান মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি টিম তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। অনুসন্ধান দলের অপর তিন সদস্য হলেন কমিশনের উপপরিচালক নুরুল হুদা, সহকারী পরিচালক মো. সাইদুজ্জামান ও আতাউর রহমান।
মাস্ক, পিপিই ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সরঞ্জাম ক্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগে এর আগে গতকাল মেসার্স জেএমআই হসপিটাল রিক্যুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রাজ্জাক ও তমা কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের সমন্বয়কারী (মেডিকেল টিম) মতিউর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। তবে একই অভিযোগে এলান করপোরেশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলামকে তলব করা হলেও তিনি গতকাল দুদকে হাজির হননি। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে তিনি হাজির না হয়ে সময় চেয়েছেন। গত ১ জুলাই এই পাঁচজনকে সংশ্লিষ্ট নথিপত্রসহ দুদকের প্রধান কার্যালয়ে তলব করে কমিশনের এই অনুসন্ধান দল।
দুদক সূত্র মতে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে কোভিড-১৯ এর চিকিৎসার জন্য নিম্নমানের মাস্ক, পিপিই ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সরঞ্জাম ক্রয়সহ বিভিন্ন হাসপাতালে সরবরাহের নামে অন্যান্যদের যোগসাজশে তাদের বিরুদ্ধে বিপুল অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। পাশপাশি অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নামে নেমেছে দুদক টিম।
করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যে এন-৯৫ মাস্ক ও পিপিইসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য সরঞ্জাম ক্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে ১৫ জুন দুদক কর্মকর্তা মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বে একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করে সংস্থাটি। এই টিমকে যথাসময়ে অনুসন্ধান প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে ১০ জুন দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এক জরুরি বৈঠকে করোনাকালে এম-৯৫ মাস্ক, পিপিইসহ বিভিন্ন সুরক্ষামূলক সামগ্রী ক্রয়ের অনিয়ম-দুর্নীতি-প্রতারণা বা জালিয়াতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। এন-৯৫ মাস্ক এবং পিপিই ক্রয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে অনিয়ম-দুর্নীতি বা প্রতারণার কিছু অভিযোগ দুদকের হটলাইন ১০৬-এ আসে বলে জানা গেছে।