পুরান ঢাকার শ্যামবাজারের কাছে বুড়িগঙ্গায় লঞ্চডুবির ঘটনাটি সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে ঘটানো একটি হত্যাকাণ্ড বলে মনে করছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। আজ সোমবার সকালে শতাধিক যাত্রী নিয়ে লঞ্চডুবির পর বেলা সাড়ে ৩টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজকের ঘটনাটি অন্যান্য ঘটনা থেকে একেবারেই আলাদা। আমি সিসিটিভি ফুটেজ দেখেছি এবং দেখার পরে আমার কাছে মনে হয়েছে, ঘটনাটি ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটানো হয়েছে। এটা মনে হচ্ছে একটা হত্যাকাণ্ড।’
ঘটনা তদন্তে একজন যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে এবং কমিটিকে এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে জানিয়ে খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘তদন্তের পরে আমরা প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেব।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যেক পরিবারকে দাফনের জন্য ১০ হাজার টাকা এবং প্রতিটি পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসাবে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করা হবে।’ এদিকে সকালে ‘মর্নিং বার্ড’ নামে ছোট লঞ্চটি ‘ময়ূর-২’ নামের আরেকটি লঞ্চের ধাক্কায় ডুবে যাওয়ার কথা বলা হলেও কীভাবে তা হয়েছে, প্রথমদিকে বোঝা যাচ্ছিল না। ঘটনাটি ধরা পড়েছে সদরঘাটের একটি সিসি ক্যামেরায়।
ভিডিতে দেখা যাচ্ছে, সকাল ৯টা ১২ মিনিটে মর্নিং বার্ড লঞ্চটি গন্তব্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। পেছন থেকে আসা ময়ূর-২ লঞ্চটি মর্নিং বার্ডকে প্রথমে বায়ের দিকে ধাক্কা দেয়। ৯টা ১৩ মিনিট ১ সেকেন্ড থেকে শুরু করে ১৩ সেকেন্ড পর্যন্ত ময়ূর-২ লঞ্চটি মর্নিং বার্ডকে ধাক্কা দিতে দিতে সামনে এগিয়ে যায়। এতে মর্নিং বার্ড লঞ্চটি বাম পাশে হেলে পড়ে ডুবে যায়।
সদরঘাটের সিসি ক্যামেরা ফুটেজে আরও দেখা যায়, মর্নিং বার্ড ডোবার সময় ময়ূর-২ ব্রেক করে। ৯টা ১৩ মিনিট ১৭ সেকেন্ডে থেকে শুরু করে ২০ সেকেন্ড সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করে ৯টা ১৩ মিনিট ২১ সেকেন্ড থেকে পেছাতে শুরু করে ময়ূর-২। ৯টা ১৩ মিনিট ৩৬ সেকেন্ড পর্যন্ত লঞ্চটিকে পিছিয়ে যেতে দেখা যায়।
কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট হায়াত ইবনে সিদ্দিক বলেন, ‘জীবিত বা মৃত সবাইকে উদ্ধারের আগে পর্যন্ত অভিযান চলমান থাকবে।’