নীলফামারীতে ছুরিকাঘাতে জিয়াউর রহমান (৪০)নামে এক ব্যাটারী চালিত ভ্যানচালক হত্যার মুল রহস্য উৎঘাটন করেছে পুলিশ। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আটক ফজলে রাব্বি (২৪) ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দিও দিয়েছেন। নিহত জিয়াউর রহমান জেলা সদরের কচুকাটা ইউনিয়নের ভরতপাড়া গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে।
শনিবার(২০ জুন) দুপুরে নীলফামারী পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার(এসপি) মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান(বিপিএম,পিপিএম)। সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, জিয়াউর রহমানের ব্যাটারী চালিত অটো ভ্যানটি ছিনতাইয়ের জন্য জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার রূপালী কেসবা মাষ্টারপাড়া গ্রামের মৃত মাজু মিয়ার ছেলে ফজলে রাব্বিসহ পাঁচজন ব্যক্তি এ পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত বৃহস্পতিবার(১৯ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে জেলা শহরের আনন্দ বাবুর পুল এলাকা থেকে ৩০০ টাকায় ভ্যানটি ভাড়া করেন পাঁচজন। পাঁচজনে ওই ভ্যানে করে রামনগর ইউনিয়নের বাহালীপাড়া পর্যন্ত যান। সেখানে পৌঁছে উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত করে জিয়াউর রহমানকে সড়কের পাশে ফেলে রেখে ভ্যানটি নিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এসময় জিয়াউর রহমানের আত্মচিৎকারে এলাকাবাসী ছুটে আসলে হত্যাকারীরা ভ্যানটি রেখে পালিয়ে যান।
পরে পুলিশ খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে জিয়াউর রহমানকে উদ্ধার করে সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন। রাতেই আশ পাশের থানাসহ হত্যাকারীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ অভিযানে নেমে পরলে ফজলে রাব্বি জলঢাকা উপজেলার পাঠানপাড়া বাজারে পুলিশের হাতে আটক হন।
গত শুক্রবার(১৯ জুন) রাত আটটার দিকে ফজলে রাব্বি ঘটনার দায় স্বীকার করে নীলফামারী জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেন ।নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মমিনুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই শাহজাহান আলী বাদী হয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতেই নীলফামারী সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। রাতে লাশ উদ্ধার করে গত শুক্রবার সকালে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান বলেন, অপরাধীদের জন্য নীলফামারী হবে খুব খারাপ জায়গা এটাই আমরা বুঝাতে চাই। আমরা শুধু চার্জশীট নয়, তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে চাই। এজন্য আসামীর আদালতের জবানবন্দি নিশ্চিত করেছি।ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা গোয়েন্দা পুলিশসহ সকল চেক পোষ্টকে সতর্ক করি। পুলিশ টিম তল্লাশী শুরু করে। ওই তল্লাসীতে সন্দেহভাজন হিসেবে ফজলে রাব্বি রাতেই আটক হয়। শুক্রবার রাত আটটার দিকে ফজলে রাব্বি ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেন। এর আগে তার দেয়া তথ্য মতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরিসহ আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। তার দেয়া তথ্য মতে অপর চারজনকে গ্রেপ্তারেও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(প্রশাসন)আবুল বাশার মোহাম্মদ আতিকুর রহমান,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নীলফামারী সার্কেল)রুহুল আমিন, সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহমুদ উন নবী, ডিআইও-ওয়ান লাইছুর রহমান, জেলা গোয়েন্দা পুলিশ(ডিবি) ওসি কেএম আজমিরুজ্জামান প্রমুখ।
সুজন মহিনুল,ক্রাইম রিপোর্টার নীলফামারী॥