বান্দরবানের লামা উপজেলায় নতুন সংযোগ দিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এক শ্রেণীর দালাল চক্র এ অনিয়ম চালাচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ওই চক্রটি। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়নবোর্ড, রাঙ্গামাটি জেলার অধীনে সম্প্রসারিত বিদ্যুতের ঠিকাদারের সহযোগী হিসাবে এবং লামা বিদ্যুৎ সরবরাহ অফিসের নাম ভাঙ্গিয়ে ওই সব দালাল চক্র বিদ্যুতের খুঁটি, লাইন স্থাপন এবং মিটার সংযোগ নিশ্চিত করার অজুহাতে আগ্রহী গ্রাহকদের কাছ থেকে এ টাকা আদায় করছে। ভুক্তভোগী গ্রাহকদের অভিযোগ ঘুষ ছাড়া বিদ্যুত লাইন বা সংযোগ কিছুই মিলছে না। লামা বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় খুঁটি কাজ চলমান রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা বলেন।

স্থানীয় ভুক্তভোগী এ সব গ্রাহকদের অভিযোগ খুটি, লাইন ও মিটার সংযোগোর জন্য গ্রাহক প্রতি ৩ থেকে ৫ হাজর টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। কোন কারনে কোন গ্রাহক টাকা দিতে ব্যর্থ বা অপারগতা প্রকাশ করলে বিভিন্ন অজুহাতে তাকে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়। লামা বিদ্যুৎ সরবরাহ অফিসের নাম ভাঙ্গিয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের যোগসাজসে লামা পৌর সভার ১নং ওয়ার্ড কমিশার ফরিদ উদ্দিন ও স্থানীয় মাষ্টাররোলে কর্মরত ইলেকট্রিশিয়ানরা এসব কাজ করছেন বলে জানা গেছে। উপজেলার রূপসীপাড়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড বাসিন্দা মুসলিম পাড়ার সুলতান মিয়ার ছেলে ছগির মিয়া জানান, ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে তাদের গ্রামে নতুন বিদ্যুৎ লাইন সম্প্রসারনের জন্য চলমান রয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ চলাকালীন সময় তারা কোন জায়গায় খুটি স্থাপন করে এবং কিছু খুটি ফেলেরেখে চলে যায়। পরে বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করা হলে তারা জানায় তোমাদের বাড়ি ম্যাপের আওতাভুক্ত নয় তাই একলক্ষ টাকা দিলে সংযোগদেয়া হবে। পরে ৬০ হাজার টাকা দিয়ে সংযোগ নিই। একই অভিযোগ দেন দরদরী বড়ুয়া পাড়ার বাসিন্দা সাধন বড়ুয়া। তিনিও ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়েছেন। উত্তর দরদরী নয়াপাড়ার বাসিন্দা আবুল হোসের জানান, আমাদের উত্তর দরদরী নয়াপাড়ায় বিদ্যুৎ লাইন স্থাপনের বাড়ি প্রতি ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা করে দিতে হয়েছে। আমি নিজেও ৯ হাজার টাকা দিয়েছি। হাতিয়া পাড়ার বাসিন্দা আজাদ মিয়া জানান, আমাদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ অফিসের ঠিকাদারের একটি দালাল চক্র ১৫ হাজার টাকা দাবী করে ৫ হাজার টাকা দিই, বাকী টাকা না দেওয়ায় তারা তিনটি গর্ত খুড়ে খুটি স্থাপন না করে চলে যায়। এই বিদ্যুতের খুটির গর্তে পড়ে আমার স্ত্রী গুরুতর আহত হয়। এই এঘটনায় তিনি পার্বত্য মন্ত্রী বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানান।

এছাড়াও উপজেলার রূপসীপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে জানান, বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার নামে লামা পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড কমিশনার ও স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তির মাধ্যমে গ্রাহক প্রতি ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা করে উত্তোলন করা হয়েছে। অনেকেই স্থানীয় চেয়ারম্যানকে অভিযোগ দিলেও তিনি বিষয়টি আমলে নেননি বলে জানান।

এদিকে টাকা না দিলে বিদ্যুৎ সংযোগ পাবে না বলে বিভিন্ন হুমকি ধমকি দেওয়ায় কেউ প্রতিবাদ করেনি।

এব্যপারে বান্দরবান বিদুৎ অফিস প্রকল্প পরিচালক তার মোটোফোনে আলাপ কালে তিনি বলেন,অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত করে দেখা হবে।ঠিকাদারি প্রতিষ্টানের নাম জানতে চাই বলেন,ফরিদ মিয়া দীর্ঘদিন যাবৎ এসকল কাজ করে আসছেন তাই তিনি লামা উপজেলায় খুঁটি কাজ দেখাশোনা করছেন।
ওয়ার্ড কমিশন ফরিদ মিয়া বিদ্যুৎ কিভাবে কাজ করছে এবং জনগন থেকে টাকা নিচ্ছেন জানতে চাইলে এসকল বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং পরে বিস্তারিত জানানো হবে জানায়।
অপর দিকে লামা বিদ্যুৎ অফিস ফরিদের পরিবারের ৪ জন সদস্য মাষ্টাররোল ও একজন মিটার পাঠক হিসেবে কিভাবে দায়িত্ব পালন করছে এ ব্যপারে লামা বিদ্যুৎ অফিস সহকারী প্রকৌশলী সাজ্জাদ ছিদ্দিকীর সাথে আলাপকালে তিনি সাংবাদিকের প্রশ্নকালে বলেন।দীর্ঘদিন যাবত কাজের অভিজ্ঞতা আছে, তাই নেয়া হয়েছে।এদের কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার পূর্বে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন তারা এসকল লোকজন নিয়োগসহ বিভিন্ন ভাবে কাজের জন্য এদের কে ব্যবহার করেছে।

এব্যপারে লামা পৌরসভার১নং কমিশনার ফরিদ মিয়া সাথে আলাপকালে তিনি বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।।

স্বপন কর্মকার লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি