করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সম্ভাব্য পদক্ষেপ সম্পর্কে বিভ্রান্তিমূলক তথ্যের বিরুদ্ধে সতর্ক করে একটি বিবৃতি দিয়েছে জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ)। বিবৃতিতে সংস্থার উপ-নির্বাহী পরিচালক শার্লোট পেট্রি গর্নিৎজকাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ‘জনসাধারণের কাছে আমাদের অনুরোধ, আপনারা কীভাবে নিজেকে এবং পরিবারকে সুরক্ষিত রাখতে পারবেন, সে সম্পর্কে যাচাইকৃত উৎস থেকে সঠিক তথ্য সন্ধান করুন।’
তিনি বলেন, ইউনিসেফ বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও), সরকারি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং বিশ্বস্ত স্বাস্থ্যসেবা পেশাজীবীদের করোনা ভাইরাস সম্পর্কে জানার সঠিক ও নির্ভরযোগ্য উৎস হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
ইউনিসেফের কর্মকর্তা একই সাথে অবিশ্বস্ত বা অ-যাচাইকৃত উৎস থেকে পাওয়া তথ্য শেয়ার বা প্রচার থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এতে করে আতঙ্ক, ভয়ভীতি ছড়াতে পারে বা কারো নামে কলঙ্ক রটে যেতে পারে। এর ফলে লোকজন এ ভাইরাস থেকে অরক্ষিত বা আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পড়তে পারে।
ইউনিসেফের নিউইয়র্ক অফিস থেকে প্রচারিত এ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বিশ্বজুড়ে লোকজন করোনভাইরাস থেকে সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সাবধানতা অবলম্বনের প্রেক্ষাপটে এ মুহূর্তে প্রয়োজন হলো বৈজ্ঞানিক প্রমাণের ভিত্তিতে যথাযথ প্রস্তুতি। তবে, করোনা ভাইরাস এবং এ থেকে সুরক্ষার উপায় সম্পর্কে যেসব তথ্য জানছেন ও অপরকে জানাচ্ছেন সেগুলোর মধ্যে কেবল অল্প কিছু তথ্য দরকারি বা নির্ভরযোগ্য।’ বিবৃতিতে বলা হয়, বিশেষ করে ইউনিসেফ মনে করে যে, সারা বিশ্বে কয়েকটি ভাষায় প্রচারিত একটি ‘ভ্রান্ত অনলাইন বার্তা’র উল্লেখ করা হয়।
ইউনিসেফের বিবৃতিতে বলা হয়, বিভিন্ন সামাজিক এবং কিছু মূলধারার মিডিয়ায় প্রচারিত এ ভুল বার্তায় বলা হয়েছে, আইসক্রিম এবং অন্যান্য ঠান্ডা খাবার এড়ানো এ ভাইরাস সংক্রমনের সূত্রপাত রোধে সহায়ক হতে পারে। যা অবশ্যই ‘সম্পূর্ণ অসত্য’।
বিবৃতিতে এই ধরনের মিথ্যাচারের হোতাদের উদ্দেশ্যে একটি সাধারণ বার্তা দিয়ে বলা হয়, ‘এটি বন্ধ করুন। ভুল তথ্য প্রচার করা এর সঙ্গে আস্থার অবস্থানে থাকা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামে চালিয়ে দিয়ে তাতে নির্ভরযোগ্যতার রং দেয়ার অপচেষ্টা বিপজ্জনক এবং ভুল। ’
ইউনিসেফ অবশ্য স্বীকার করেছে যে, আজকের সমাজের তথ্য সমৃদ্ধির এ দিনে নিজেকে এবং প্রিয়জনদের সুরক্ষিত রাখার উপায় সম্পর্কে জানতে ঠিক কোথায় যেতে হবে তা জানা কঠিন হতে পারে।
এতে বলা হয়, কিন্তু আমরা আমাদের নিজেদের এবং আমাদের প্রিয়জনদের সুরক্ষিত রাখতে পূর্ব সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহনের ব্যাপারে যেমনটি সতর্ক থাকবো ঠিক তেমনটি এ সম্পর্কিত তথ্য বিনিময়ের ক্ষেত্রেও এর সঠিকতার ব্যাপারেও আমাদের কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এতে আরো বলা হয়, ইউনিসেফ এ ভাইরাস সম্পর্কে সঠিক তথ্য সরবরাহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, সরকারি কর্তৃপক্ষ এবং ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, লিংকডইন এবং টিকটক-এর মতো অনলাইন অংশীদারদের সাথে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ইউনিসেফ সঠিক তথ্য ও পরামর্শ সুলভ এবং পাশাপাশি ভুল তথ্য উদ্ভূত হলে তা জনসাধারণকে অবহিত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চায়।