বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) চত্বরে সোমবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল উদ্বোধন করা হয়েছে। কৃষি মন্ত্রী কৃষিবিদ ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ম্যুরালের উদ্বোধন করেন।
ম্যুরাল উদ্বোধন উপলক্ষে বাংলাদেশ সচিবালয়ের কৃষি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষ এবং বারি’র মূল কার্যালয় চত্বরে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামান এবং বারি’র মহাপরিচালক ড. আবুল কালাম আযাদ অনুষ্ঠান সঞ্চলনা করেন।
বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিকে মানসপটে চির অম্লান করে রাখার জন্য ‘মুজিব বর্ষ ২০২০’ কে সামনে রেখে গত বছরই বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট চত্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ম্যুরাল স্থাপনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সেই অনুযায়ী বারি’র প্রধান কার্যালয়ের সামনে দু’টি ফোয়ারা, লন গ্রাস এবং মার্বেল পাথর সম্বলিত মনোরম স্থাপত্য শৈলীর একটি নান্দনিক স্থাপনায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ম্যুরাল নির্মান করা হয়েছে। ম্যুরালটি স্থাপনে অনন্য ভূমিকা রেখেছেন দেশের প্রখ্যাত শিল্পী শ্যামল চৌধুরী এবং স্থপতি অরুময় বিশ্বাস।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব এ্যাড. মো. জাহাঙ্গীর আলম, গাজীপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাড. রীনা পারভিন, বারি’র প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও এমেরিটাস সায়েন্টিস্ট (ঘঅজঝ) ড. কাজী এম বদরুদ্দোজা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রাক্তন মহাপরিচালক ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের এপিএ এক্সপার্ট-পুলের সদস্য মো. হামিদুর রহমান, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) এর মহাপরিচালক ড. বীরেশ কুমার গোস্বামী। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বারি’র পরিচালকবৃন্দ, ম্যুরাল কমিটির সদস্যবৃন্দ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, বারি’র বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষি মন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জন, কৃষকের আয় বৃদ্ধি, ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে দানা জাতীয় শস্য, সবজি, কন্দাল ফসল, ডাল ও তৈলবীজ, মসলা, ফল ও অন্যান্য ফসলসহ ২০৮টি ফসলের ওপর গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। প্রতিষ্ঠানটি এ পযন্ত ৫৫৮টি উচ্চ ফলনশীল উন্নত জাত এবং ৫৩১ টি অন্যান্য প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। এ সকল জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ফলে বিভিন্ন ফসলের ফলন ও মোট উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছেযা দেশের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জন, দারিদ্র বিমোচন, আয় ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। এসডিজি-২ এর ৫টি লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ৬৫টি প্রকল্প চিহ্নিত করেছে।
মন্ত্রী আরো বলেন, কৃষি ক্ষেত্রে এযাবৎ অর্জিত সাফল্যের মূলে রয়েছে স্বাধীনতা আর এই স্বাধীনতা অর্জনের মূল নায়ক ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। রাষ্ট্র নায়ক হিসেবে বঙ্গবন্ধুর উন্নয়ন দর্শনের মূলে ছিল কৃষি। কৃষির উন্নয়নে প্রাথমিক ব্যবস্থা হিসেবে তিনি কৃষিবিদদের চাকুরী প্রথম শ্রেণীতে উন্নীত করে কৃষির গুরুত্বকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। আর বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে হলে কৃষি গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে কৃষকের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাতে হবে। বঙ্গবন্ধু এ কারণেই কৃষিকে এতো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতেন। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, দেশের সর্ববৃহৎ গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ম্যুরাল স্থাপন করা হয়েছে।