সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে ফের সুর চড়ালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ উৎসবের মঞ্চ থেকে কেন্দ্রীয় সরকারকে হুঁশিয়ারি দিলেন তিনি। দাবি করলেন, এ রাজ্যে কিছুতেই সিএএ ও এনআরসি চালু হতে দেবেন না তিনি। প্রয়োজনে একাই প্রতিবাদের রাস্তায় হাঁটবেন।
সিএএ এবং এনআরসি নিয়ে দেশ জুড়ে লাগাতার বিক্ষোভ-আন্দোলন চলছে। তার জোরালো আঁচ পড়েছে এ রাজ্যেও। সিএএ নিয়ে নিজের অবস্থান আগেই স্পষ্ট করেছেন তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরবঙ্গ উৎসবের মঞ্চ থেকে এ দিন তিনি বলেন, ‘‘আপনারা এনআরসি নিয়ে চিন্তা করবেন না। আমি আপনাদের পাশে আছি। কেউ আপনাদের অধিকার কেড়ে নিতে পারবে না।’’ সঙ্গে তিনি জুড়ে দেন, ‘‘সিএএ নিয়েও চিন্তা করবেন না। আমি বাংলার মানুষের পাশে আছি। এ মাটি আমাদের। বাইরের কে কী বলল, তা নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।’’
এ দিন তাঁর বক্তব্যে কোথাও বিজেপির নাম পর্যন্ত উল্লেখ করেননি মমতা। কিন্তু, বিগত লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে বিজেপির উত্থানের প্রসঙ্গ তুলে ধরে মমতা বলেন, ‘‘আমরা ভোটের সময় শুধুমাত্র পাহারাদার হিসাবে আসি না। আমি ৩৬৫ দিনের পাহারাদার। মানুষের বিরুদ্ধে কোনও কাজ আমি কোনও দিন করতে দেব না।’’
এনআরসি আটকাতে রাজ্যে এনপিআর-এর কাজ স্থগিত রাখা হয়েছে। সিএএ ও এনআরসি নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতের মধ্যেই সম্প্রতি জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি (এনপিআর) নিয়ে কেন্দ্রের ডাকা বৈঠকও বয়কট করে পশ্চিমবঙ্গ। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘প্রথমে ভেবেছিলাম ওটা সেন্সাস। কিন্তু পরে দেখলাম, বাবা-মায়ের নাম, জন্মস্থান, তার প্রমাণ, জন্মের শংসাপত্র চাওয়া হচ্ছে। ওই শংসাপত্র তো আমিও দেখাতে পারব না।’’ সিএএ ও এনআরসি-র বিরোধিতা করলেও, এনপিআর নিয়ে কেন্দ্রের ওই বৈঠকে যোগ দিয়েছিল বহু রাজ্যই। সে কথা তুলে ধরে মমতা বলেন, ‘‘অনেকে প্রতিবাদ করেও বৈঠকে চলে গেল। কিন্তু, আমি যাইনি। আমি একলা চলব। একলাই প্রতিবাদ করব। কেউ পাশে না থাকলে একাই লড়ব। বাংলার সিএএ-এনআরসি হবে না।’’
দিন কয়েক আগে সিএএ নিয়ে প্রতিবাদ জানানোয়, জেএনইউ-র মতো উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ুয়াদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছিল বিজেপির কর্মী-সমর্থকের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।