২০১৯ সালে মোট ৫ হাজার ৫১৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৭ হাজার ৮৫৫ জন এবং আহত ১৩ হাজার ৩৩০ জন। একই সময় রেলপথে ৪৮২টি দুর্ঘটনায় ৪৬৯ জন নিহত ও ৭০৬ জন আহত হয়েছেন। নৌপথে গত একবছরে ২০৩টি দুর্ঘটনায় ২১৯ জন নিহত, ২৮২ জন আহত এবং ৩৭৫ জন নিখোঁজ হন। সড়ক, রেল, নৌপথে সর্বমোট ৬ হাজার ২০১টি দুর্ঘটনায় ৮ হাজার ৫৪৩ জন নিহত এবং ১৪ হাজার ৩১৮ জন আহত হয়েছেন।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির বার্ষিক সড়ক দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। শনিবার (১১ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ প্রতিবেদন তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ২০১৯ সালে সড়ক দুর্ঘটনার পরিমাণ ২০১৮ সালের সমান হলেও প্রাণহানী ৮ দশমিক ০৭ শতাংশ বেড়েছে।যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদনে বলা হয়, সড়ক দুর্ঘটনায় আক্রান্তদের মধ্যে ৯৮৯ জন চালক, ৮৪৪ জন পরিবহন শ্রমিক, ৮০৯ শিক্ষার্থী, ১১৫ জন শিক্ষক, ২১৬ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৮৯৪ নারী, ৫৪৩ শিশু, ৩৬ জন সাংবাদিক, ২৬ জন চিকিৎসক, ১৬ জন আইনজীবী ও প্রকৌশলী এবং ১৫৩ জন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে।এর মধ্যে নিহত হয়েছেন ২৪ জন সেনাসদস্য, ৫৩ জন পুলিশ ও র্যাব সদস্য, তিন বিজিবি সদস্য, একজন ফায়ার সার্ভিস কর্মী, একজন নৌ-বাহিনীর সদস্য, আটজন মুক্তিযোদ্ধা, ছয়জন সাংবাদিক, ৫৮২ নারী, ৪৪৭ শিশু, ৪৭৪ শিক্ষার্থী, ৮১ জন শিক্ষক, ৬৯১ চালক, ৩৫৭ জন পরিবহন শ্রমিক, নয়জন প্রকৌশলী, পাঁচজন আইনজীবি, ২৫ জন চিকিৎসক ও১১৫ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।
এসময়কালে সংগঠিত দুর্ঘটনায় সর্বমোট ৭ হাজার ৩৫৬টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে, যার ১৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ বাস, ২৯ দশমিক ৮১ শতাংশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, ৫ দশমিক ২২ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস, ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ২১ দশমিক ৪ শতাংশ মোটরসাইকেল, ৮ দশমিক ০৪ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৭ দশমিক ৩২ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা। সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৫৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ গাড়িচাপা দেওয়ার ঘটনা, ১৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৮ দশমিক ০৭ শতাংশ খাদে পড়ে, ৫ দশমিক ৯১ শতাংশ বিবিধ কারণে, ০ দশমিক ৩৪ শতাংশ চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে এবং ০ দশমিক ৯৭ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষ।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ উঠে এসেছে, এবছর সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয় ১৪ জুলাই। ওইদিন দুটি দুর্ঘটনায় দুইজন প্রাণ হারান। সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন গত ৫ জুন। ওইদিন মোট ২২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৬ জন নিহত এবং ৯৩ জন আহত হন। সবচেয়ে বেশি আহত হন ১৫ আগস্টে। ওইদিন ২১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩০ জন নিহত এবং ২২১ জন আহত হয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ড্রাইভার ট্রেনিং সেন্টারের চেয়ারম্যান নুরুন্নবী শিমু, এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক আবদুল হক, সাংবাদিক আবু সাঈদ খান প্রমুখ।