আসন্ন সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় ফরম সংগ্রহের দুইদিন পর তা জমা দিয়েছেন এফবিসিসিআই ও জয়যাত্রা টেলিভিশনের চেয়ারম্যান হেলেনা জাহাঙ্গীর। শুক্রবার (২৭ডিসেম্বর) সকালে বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী এবং জয়যাত্রা টেলিভিশনের প্রতিনিধি দলের বিশাল গাড়ী বহর নিয়ে আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ে দলের উপদফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার কাছে এ মনোনয়ন পত্র জমা দেন।
মনোনয়নপত্র জমা শেষে হেলেনা জাহাঙ্গীর বলেন, এই শহরের অনেকেই আমাকে মেয়র হিসাবে চাচ্ছে। তাঁরা নানা রকমের প্রচারণায় আছে। ঢাকা শহরে তাঁরা আমার মনোনয়ন চেয়ে একরকম লড়াই সংগ্রাম করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁরা জানান দিচ্ছে, দেশের প্রধানমন্ত্রী নারী, স্পীকার নারী— তবে ঢাকার মেয়র হিসাবে কেন নয় সিস্টার হেলেন ? সত্যি বলছি আমার ভালই লেগেছে যে, তাঁরা আমাকে দায়িত্বশীল পদে প্রত্যাশা করছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার জন্য সত্যিই কি আমি সে রকম সত্তা? একজন বিশ্বমানের নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সৈনিক হতে পারাটা খুব কঠিন কাজ। আমি নেহাত সাধারণ মানুষ।
তবে এই দেশেই আইন ও সালিশ কেন্দ্রের কর্ণধার হামিদা হোসেন এর কাছ হতে যেদিন সিস্টার হেলেন হিসাবে সমাজকর্মী হয়ে সম্মাননা নিয়েছিলাম, সেদিন হতেই আমি দেশের কল্যাণে কাজ করে যাবো বলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছিলাম।
কাজেই উত্তর দিতে চাইলে বলবো, দেখা যাক, কী হয় । আলোচিত ব্যবসায়ী নারী নেত্রী তথা এফবিসিসিআই পরিচালক এবং জয়যাত্রা টেলিভিশনের চেয়ারম্যান হেলেনা জাহাঙ্গীর সিআইপি সঙ্গত কারণেই তাই আবার আলোচনায়। এবার আসন্ন ডিএনসিসি উত্তর এর মেয়র নির্বাচন ঘিরে। হ্যাঁ, ইতোমধ্যে একাধিকবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে আন্তর্জাতিক সফর করা হেলেনা জাহাঙ্গীর সব সময় বলে থাকেন, “ভাল কাজ করে যাব। কিছু পাওয়ার জন্য লড়াই করবার মাহাত্ম্য নেই। সমাজের বোন হিসাবে সকলের কাছে সিস্টার হতে পেরেছি।
মুসলিম পরিবারে জন্ম নিয়ে সিস্টার উপাধি পেয়েছি, প্রিয় পতি একজন সফল পিতা ও ব্যবসায়ী হওয়াতে সব কিছু সহজ ছিল না কিন্তু নারী হিসাবে সমাজের প্রতিকুল পরিবেশকে ডিঙ্গিয়ে ছুটছি তো। হেলেনা বলছেন, মেয়র নির্বাচন করাটা এক রকমের চ্যালেঞ্জ, আমি নিতে রাজী কিন্তু তা নির্ভর করবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা চান কিনা ? আবার আমার এই অংশগ্রহণের কারণে জনাব আতিক ভাই আবার কষ্ট পান কিনা ? সব কিছু দলীয় সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে।
নেত্রী যদি আমাকে মনোনীত করেন তাহলে একটি আধুনিক নগরে রুপান্তরিত করবো এবং প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে চাই। পাশাপাশি ঢাকা মহানগর উত্তর যুবকদের নিয়ে আমার পরিকল্পনা আছে। তাদের কর্মক্ষম করাই আমার প্রথম লক্ষ্য। একটি পরিকল্পিত নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে চাই উত্তর সিটি করপোরেশনকে। আর্ত-মানবতার সেবায় জযাযাত্রা ফাউন্ডেশন এর মাধ্যমে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি আমি । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই আমার অভিভাবক। তিনি যে সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটাই মেনে নেবো।
মনোনয়নের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। তবে দল ও প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে কাজ করব।
এর আগে, গত বুধবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে হেলেনা জাহাঙ্গীরের পক্ষে মেয়র পদে ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন জয়যাত্রা টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি জিএম শাহজাহান এবং কাতার প্রতিনিধি এমজি গোলাম মাওলা হাজারী।
শুক্রবার ছিলপ্রার্থীদের ফরম সংগ্রহের শেষ দিন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সমর্থন প্রত্যাশীদের আবেদনপত্র মেয়র পদে ২৫ হাজার টাকা, কাউন্সিলর পদে আবেদন বাবদ ফি দশ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ কাউন্সিলের ও নারী সংরক্ষিত আসনসহ মোট ১৭২টি। ঢাকা উত্তর সিটিতে কাউন্সিলর সাধারণ ওয়ার্ড ৫৪টি এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড ১৮টি। আর দক্ষিণে সাধারণ ওয়ার্ড ৭৫টি এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড ২৫টি। উল্লেখ্য, আগামী ৩০ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) ঢাকা উত্তর (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। পুরো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)।ওইদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।