পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননার দায়ে এক বিশ্ববিদ্যালয় প্রভাষককে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ৩৩ বছর বয়সী জুনাইদ হাফিজকে ২০১৩ সালের মার্চে গ্রেফতার করা হয়। নবী মুহাম্মদকে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে অসম্মানসূচক মন্তব্য করার অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। পাকিস্তানে ব্লাসফেমি বা ধর্ম অবমাননার অভিযোগ খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। এই আইনের অধীনে কোনও ব্যক্তিকে কঠোর শাস্তির সম্মুখীন করার জন্য কখনও কখনও শুধু অভিযোগই যথেষ্ট হয়।
জুনাইদ হাফিজের পক্ষে তার প্রথম আইনজীবী ২০১৪ সালে এই মামলার দায়িত্ব নেওয়ায় সে বছরই তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। কারাগারেও অন্যান্য কয়েদিরা জুনাইদ হাফিজের ওপর বেশ কয়েকবার আক্রমণ চালানোর চেষ্টা করলে বেশ কয়েক বছর তাকে নির্জন কারাবাস ভোগ করতে হয়। মুলতানের যেই কারাগারে হাফিজকে আটক রাখা হয়েছে, সেই কারাগারের আদালতই তাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়।
মার্কিন সাহিত্য, ফটোগ্রাফি ও থিয়েটার বিষয়ে ফুলব্রাইট স্কলারশিপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে মাস্টার্স করেছেন জুনাইদ হাফিজ। পাকিস্তানে ফিরে এসে গ্রেফতার হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি মুলতানের বাহাউদ্দিন জাকারিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষকের দায়িত্বে ছিলেন। হাফিজের বর্তমান কৌঁসুলিরা মন্তব্য করেছেন যে এই রায় ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’ রায়ের বিরুদ্ধে অ্যাপিল করবে বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন তারা। রায় ঘোষণার পর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা তাদের সহকর্মীদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করে আনন্দ প্রকাশ করেন। মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এই রায়কে ‘অত্যন্ত হাতাশাজনক ও বিস্ময়কর’ বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।