দক্ষিণের জেলা ঝিনাইদহের ছয় উপজেলার মাঠের পর মাঠ সর্ষে চাষ হয়েছে। এবার কৃষক ও সংশ্লিষ্ট অফিস বাম্পার ফলনের আশা করছেন। দেশের ঋতু পরিক্রমায় হেমন্ত ও শীত ঋতুতে মাঠে মাঠে এই সরিষার চাষ হয়ে থাকে। ফলে এ জেলায় চাষ হওয়া সরিষা দেশের মোট চাহিদার বড় একটি অংশ পুরণে ভূমিকা রাখে বলে জেলার কৃষি অফিস জানিয়েছে।
এ অঞ্চলের প্রত্যান্ত এলাকা ঘুরে দেখা যায় মাঠের পর মাঠ সরিষা ফুলের অপূর্ব হলুদ শোভার চোখ জুড়ানো দৃশ্য আর মন মাতানো গন্ধে প্রকৃতির সৌন্দর্য যেমন বাড়িয়ে দিয়েছে। ঠিক তেমনি অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার হলুদ স্বপ্নে বিভোর এ অঞ্চলের কৃষকরা। চলতি মৌসুমে এ জেলায় ৩ হাজার ৩৩১ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হলেও চাষ হয়েছে ৩ হাজার ৩৩৫ হেক্টর। কৃষকরা এখনো সরিষা চাষ করছে। ফলে চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার বেশি সরিষা চাষ হবে বলে আশা করছে জেলা কৃষি অফিস। গত মৌসুমে ঝিনাইদহে ৩ হাজার ১২৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হলেও চাষ হয়েছিল ৩ হাজার ১৩০ হেক্টর জমিতে। ওই বছর ফলন হয়েছিল ৪ হাজার ৫৬ মেট্রিক টন সরিষা। জেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আমন ধান উঠার পর ইরি বোরো ধান রোপনের আগে জমি অলস পড়ে থাকে। এ সময়ে শরিষা চাষ করা হয়। ফলে একদিকে যেমন তেলের চাহিদা মিটিয়ে অর্থনৈতিকভাব লাভবান হয়, অন্যদিকে জমিতে জৈব সারের ঘাটতি পুরণে বিরাট ভূমিকা রাখে। এছাড়া জেলার কালীগঞ্জে অবস্থিত অন্যতম ভারি শিল্প মোবারকগঞ্জ চিনিকল। এসময় মিলটির আখ রোপন মৌসুম। ফলে কৃষকরা আখ রোপনের পর ওই জমিতে সরিষা চাষ করে থাকে। ফলে একই জমিতে আখের সাথে সরিষা চাষের বাড়তি একটি সুযোগ পেয়ে থাকে কৃষকরা। জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃপাংশু শেখর বিশ্বাস জানান, গত কয়েক বছর ধরে এ অঞ্চলে সর্ষে চাষ বাড়ছে। উচ্চ ফলনশীল সরিষা ও আবাদ ভালো হওয়ায় গত বছরের থেকে এবার বাম্পার ফলনের আশা করছেন তিনি। আমন ধান কাটার পর মাঠ ফাঁকা হয়ে যাওয়ায় জমি পড়ে থাকে। এসময় সরিষা চাষ করা হয়। সরিষা তুলে আবার বোরো ধান আবাদ করা যায়। ফলে প্রতিবছরই এ অঞ্চলের কৃষকরা সরিষা চাষ করে থাকে।