মাদারীপুরে বিভিন্ন বাজারে প্রচুর শীতকালীন সবজি মজুদ থাকার পরও দাম কমছেনা। প্রতি বছর শীতকালে সবজির দাম স্বাভাবিক থাকলেও এবার দেখা যাচ্ছে উল্টোচিত্র। এতে করে হিমশিম খেতে হচ্ছে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোকে। জেলার ৪টি উপজেলার কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, ক্রেতাদের চোখে-মুখে চাপা উদ্বেগ। সবজির এই ঊর্ধ্বগতিতে বেশি বিপাকে পড়েছে স্বল্পআয়ের মানুষ। দাম শুনে তাদের কপালের ভাঁজ। কী কিনবেন আর কী কিনবেন না, এ নিয়ে দিশেহারা তারা।
ক্রেতাদের অভিযোগ, বাজারে প্রশাসনের নজরদারির অভাব। বিক্রেতারা তাই নানা অজুহাতে দাম বাড়াচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছে, সাম্প্রতিক সময়ের বৃষ্টিতে চাষিদের ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। তাই সরবরাহ নেই। এছাড়া আড়তেও সবজির দাম চড়া। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ঝিঙা ও ক্ষীরার কেজি এখন ৮০ টাকা। তিতকরলা ও ফুলকপি ৭০ টাকা। অন্য সব সবজিও বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকার উপরে। বাজারে সবজির দাম শুনে অবাক হচ্ছেন ক্রেতারা। তবে সবজির এমন উচ্চদামে বিক্রেতাদের মাঝেও স্বস্তি নেই।
মাসখানেক আগে ফুলকপির দাম ছিল ৫০-৬০। এটি এখন ৮০-৯০ টাকা। বাঁধাকপি, শিম ও মূলার দাম একমাস ধরে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। বাঁধাকপি ও মূলা ৫০ এবং শিম ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম বেড়েছে অন্য সবজিরও। শসা, ঢেঁড়স, বরবটি, তিতকরলা, ঝিঙা ও চিচিঙ্গা দুসপ্তাহ আগে কেজি প্রতি ছিল ৫০-৬০ টাকা। এখন শসা ও ঝিঙা ৮০, তিতকরলা ৮০, বরবটি, চিচিঙ্গা ও ঢেঁড়স ৭০ টাকা । মাদারীপুর সদরের ইটেরপুল বাজার করতে আসা সাবেক স্কুলশিক্ষক আলহাজ¦ আবদুল বারী মুন্সি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘সবজির বাজারে যেন আগুন লেগেছে। সপ্তাহখানেক আগে ঝিঙা কিনলাম কেজি ৬০ টাকা দরে। আজ নাকি ৮০ টাকা! এত দামে সবজি কিনবো কীভাবে?’
বেসরকারি চাকুরিজীবী আমানউল্লাহ বলেন, মাদারীপুরের বিভিন্ন স্থানে প্রচুর সবজি চাষ হয়। তারপরও এখানে সবজির দাম বেশি। অথচ কৃষক তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেনা। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দুই তিনগুন বেশি দামে বিক্রি করছে। নতুন বাজারের সবজি বিক্রেতা মকবুল হোসেন বলেন, যেখানে ক্রেতারা আগে ১ কেজি সবজি কিনত, এখন অনেকে আধা কেজির বেশি নিচ্ছে না। বেচাকেনা কম। আড়তেও সরবরাহ কম। পেঁয়াজের ঝাঁজও কমছে না। মিয়ানমারের পেঁয়াজ ২২০-২৫০, তুরস্ক ও মিশরের ১৫০ ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভারতীয় নাসিক পেঁয়াজ ২২০ টাকা। ঝাঁজ কিছুটা কমেছে আদার।
সাবরীন জেরীন,মাদারীপুর।